গুলিবিদ্ধ নাজমুল হক চাঁচোলর জালালপুরের বাসিন্দা। অন্যজন আনিকুল ইসলাম। তাঁর বাড়ি চাঁচোলের চন্দ্রপাড়া এলাকায়। গতকাল দুষ্কৃতীদের গুলি চালানোর সময় মালদহ থেকে স্বামী আনিকুলের সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন স্ত্রী মেরিনা বিবি।
ফোনের এপার থেকে শ্রীনগরের গুলির আওয়াজ শোনেন স্ত্রী। এরপর ফোন করলেও ওপার থেকে উত্তর আসেনি। প্রিয়জনদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবরে উদ্বেগে মালদহের দুই পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবার।
advertisement
আরও পড়ুন- দিনে দুপুরে গুলি করে বাইক ছিনতাই, পিছনে মাওবাদীরা? আতঙ্ক বাড়ছে ঝাড়গ্রাম
জানা গিয়েছে, গত দু'মাস আগে ওঁরা শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে শ্রীনগরের যান। মূলত বেশি মজুরি লাভের আশায় তাঁরা মালদহ থেকে পাড়ি দিয়েছিলেন সুদূর শ্রীনগরে। সেখানে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে থাকতেন সম্পর্কে শ্যালক ও জামাইবাবু।
আচমকা গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা ঘরে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ দুজনের মধ্যে বছর সাতাশের আনিকুল ইসলামের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর মাথায় ও ঘাড়ে দুটি গুলি লেগেছে। সংকটজনক অবস্থায় চিকিৎসা চলছে স্থানীয় হাসপাতালে।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী আনিকুল। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ছাড়াও রয়েছে দুই শিশু সন্তান। চাঁচোলের চন্দ্রপাড়া পঞ্চায়েতের রহমতপুর গ্রামে চরম উদ্বেগে রয়েছে পরিবার ও প্রতিবেশীরা।
স্ত্রী মেরিনা বিবি জানান, গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ নামাজের পর ঘরে রান্না করছিলেন স্বামী। ফোনে কথা চলছিল দুজনের। সেই সময়ে আচমকা সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা ঘরে ঢুকে গুলি চালাতে শুরু করে। ফোনের এপারে থেকে স্পষ্ট গুলির শব্দ শুনে আঁতকে ওঠেন তিনি। কেটে যায় ফোন। তিনি ঘুরিয়ে ফোন করলে আর কথা হয়নি। পরে জানতে পারেন স্বামী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
মালদহ চাঁচোলের জালালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের জালালপুর গ্রামেই বাড়ি শ্রীনগরে গুলিবিদ্ধ আরও এক শ্রমিক নাজিমুল হকের। সদ্য ১৮ বছর পেরোনো নাজিমুল জামাইবাবুর সঙ্গে শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলে শ্রীনগরে। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারে মা, বাবা, দুই দিদি আর এক ছোট ভাই রয়েছে। রোজগারের আশায় ভিন রাজ্যে গিয়েছিল নাজিমুল।
আরও পড়ুন- প্রেমে প্রত্যাখ্যান মানতে পারেননি, প্রেমিকাকে আগাম ইঙ্গিত দিয়ে আত্মঘাতী যুবক
দিন দুয়েক আগে পরিবারের সঙ্গে কথা হয় তাঁর। ঈদে বাড়ি ফেরার কথা জানিয়েছিল মাকে। কিন্তু, গতকাল শ্রীনগর থেকে টেলিফোনে হিন্দি ভাষায় নাজমুলের গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা জানানো হয় পরিবারকে। জানাগিয়েছে, ডান হাতে দুটি গুলি লেগেছে নাজিমুলের। এরপর থেকেই চরম উদ্বেগে পরিবার।