পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তাজপুর সমুদ্র সৈকত আস্তে আস্তে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তার উপস্থিতি জানান দিচ্ছে। তাজপুর সমুদ্র সৈকতে মানুষের ভিড় থাকে না খুব বেশি। যারা ভিড় এড়িয়ে সমুদ্র সৈকত উপভোগ করতে চায়, তাদের আসতেই হবে তাজপুর সমুদ্র সৈকতে। সমুদ্র সৈকত মানে প্রশস্ত বালিয়াড়ি ঢেউয়ের আনাগোনা। জোয়ারে সমুদ্র কাছে চলে আসা আবার ভাটার টানে সমুদ্রের ফিরে যাওয়া। দিগন্ত জুড়ে সূর্যের উদয় ও অস্ত যাওয়া। সমুদ্র প্রেমী মানুষের কাছে সমুদ্র সৈকত আলাদা নস্টালজিয়ার কাজ করে। নিজের ভাবনার গভীরে হারিয়ে যেতে চাইলে তাজপুর সমুদ্র সৈকত আপনাকে প্রশ্রয় দেবে। বর্তমানে তাজপুরে পূর্ব ভারতের বৃহত্তম সামুদ্রিক বন্দর গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে।
advertisement
বঙ্গোপসাগরের উপকূলে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তাজপুর আমাদের অত্যন্ত পরিচিত একটি সমুদ্র সৈকত। পূজার ছুটি বা সপ্তাহ শেষে দীঘা এবং মন্দারমনির পর্যটকের ভিড় থেকে যারা একটু দূরে থাকতে পছন্দ করে তাদের জন্য তাজপুর আদর্শ জায়গা। দিঘা সমুদ্র সৈকত জুড়ে ঝাউবন ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। পর্যটকেরা সমুদ্র সৈকতে ঝাউবনের মধ্যে হারিয়ে যেতে চাইলে তাজপুর সমুদ্র সৈকত রাতের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। জেলা বনদপ্তর এর অধীনে থাকা ঝাউবন তাজপুরের সমুদ্র সৈকতকে অন্য মাত্রা দিয়েছে। জোৎস্নার আলোয় তাজপুর সমুদ্র হয়ে ওঠে রূপবতী। হোটেলের ব্যালকনিতে বসে সেই রূপ দেখার অমোঘ আকর্ষণ পর্যটক ফেরাতে পারে না। আবার অন্ধকার রাতে সমুদ্রের ধারে হোটেলের ব্যালকনিতে বসে সমুদ্রের ডাক ও ঝাউবনের শোঁ শোঁ আওয়াজ পর্যটকদের হাতছানি দেয় অজানা সঙ্গমের।
মন্দারমনি ও শংকরপুর সমুদ্র সৈকতের মাঝে অবস্থিত তাজপুর সমুদ্র সৈকত। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সদর শহর তমলুক থেকে দূরত্ব মাত্র ৭৫ কিলোমিটার। বাস বা ট্রেন দুটোতেই পৌঁছানো যায় তাজপুর সমুদ্র সৈকতে। মেছেদা থেকে দিঘা গামী বাসে করে বালিসাই নেমে সেখান থেকে টোটো, ভ্যান এবং গাড়ি পাওয়া পাওয়া যায় তাজপুর সমুদ্র সৈকত যাওয়ার। অন্যদিকে দীঘা হাওড়া রেল পথের দিঘাগামী এক্সপ্রেস ও লোকাল ট্রেনে রামনগর রামনগর স্টেশনে নেমে টোটো ভ্যান রিক্সা অটো ও ছোট গাড়ি করে তাজপুর সমুদ্র সৈকত যাওয়া যায়। বর্তমানে করোনার জন্য বন্দর লোকাল ট্রেন। চালু রয়েছে সাপ্তাহিক ও দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রেন। এছাড়াও গাড়ি বুক করে সরাসরি তাজপুর সমুদ্র সৈকতে আসা যায়।
কোথাও বেড়াতে গেলে যেটা প্রথমেই মাথায় আসে কোথায় থাকবো। হোটেল সাধ্যের মধ্যে কিনা। হোটেলের পরিবেশ কেমন। এইসব প্রশ্ন বাঙালিদের মাথায় ঘুরপাক খায়। একটা সময় দিঘা মন্দারমনি মত তাজপুর জনপ্রিয়তা লাভ না করায় একসময় ছিল না ভালো কোন হোটেল বা রিসোর্ট। এখনো তাজপুর সমুদ্র সৈকত যাওয়ার কথা উঠলেই পর্যটকদের মধ্যে সেই ভীতিটা কাজ করে। তাজপুর সঠিক থাকার জায়গার সন্ধান না থাকায় অনেকেই যেতে চান না। তবে বর্তমানে আগের আগের চেয়ে অনেক পরিবর্তন এসেছে তাজপুর সমুদ্র সৈকত পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে। অনেকগুলি হোটেল ও রিসোর্ট গড়ে উঠেছে তাজপুর সমুদ্র সৈকত ঘিরে। বিভিন্ন হোটেল গুলির প্রতিদিনের রুম ভাড়া ২০০০ থেকে ৪০০০ টাকা। খাওয়া-দাওয়ার জন্য আলাদা মূল্য দিতে হবে। পর্যটকেরা চাইলে হোটেলের বাইরে খেতে পারে। সমুদ্র থেকে তাকিয়ে দেখলে নজরে আসে না কোন হোটেল, কিন্তু তার মধ্যেই লুকিয়ে আছে অনেক রিসর্ট। গাছ গাছালি দিয়ে ঘেরা। এ এক অন্য বৈচিত্র! এমনই এক নিবিড় পরিবেশে অবস্থিত স্পন্দন রিসর্ট। যোগাযোগ: 9830240652, 9830135736। ঘর ভাড়া দৈনিক হাজার টাকা থেকে শুরু।
সৈকত শী
আরও পড়ুন: পুজোয় পর্যটকদের জন্য সুখবর, খুলে গেল সুন্দরবন পর্যটন