এই শিল্পের উন্নয়ন, সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘায় অনুষ্ঠিত হল এক বিশেষ সম্মেলন—হিউম্যান হেয়ার এক্সপোর্টার্স মিট, যেখানে উপস্থিত ছিলেন শতাধিক উদ্যোক্তা ও শিল্প-সম্পৃক্ত প্রতিনিধি। মূলত মহিলাদের কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভরতার বার্তাই ছিল এই সভার মূল কেন্দ্রে।
এই মুহূর্তে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ চুল প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত, যার মধ্যে প্রায় সাত লক্ষই মহিলা। তারা মূলত চুল সংগ্রহ, পরিস্কার, প্রসেসিং ও প্যাকেজিং-এর কাজ করেন। এই শিল্প মহিলাদের ঘরে বসে উপার্জনের সুযোগ তৈরি করেছে, ফলে সমাজে তাদের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থানেও পরিবর্তন এসেছে। সম্মেলনে জানান হয়, এখনই কাঁচা চুলের (গুলি চুল) সরাসরি রফতানি বন্ধ করা দরকার, কারণ এর ফলে রাজ্যের প্রসেসিং ইউনিটগুলো চুলের সংকটে পড়ছে।
advertisement
একই সঙ্গে গুলি চুলের দামের উপরে নজরদারি চালু করা, এবং রফতানি নীতিতে স্বচ্ছতা আনার দাবি তোলা হয়। এই শিল্প যাতে সরকারি উন্নয়ন মিশনের অন্তর্ভুক্ত হয় সম্মেলনে তারও দাবি জানান উদ্যোক্তারা। এই সম্মেলনে বিশেষ গুরুত্ব পায় আগামী প্রজন্মকে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত করা এবং প্রযুক্তির সাহায্যে মহিলাদের আরও দক্ষ করে তোলার দিকটি। এই শিল্প শুধু অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নয়, বরং একটি সামাজিক বিপ্লবের পথও তৈরি করছে বলে মত প্রকাশ করেন অনেকেই। দিঘার এই সম্মেলন বাংলার এক নতুন সম্ভাবনার কথা বলল।
হিউম্যান হেয়ার প্রক্রিয়াকরণ শিল্প শুধুমাত্র অর্থ উপার্জনের মাধ্যম নয়, বরং গ্রামীণ মহিলাদের ক্ষমতায়নের একটি কার্যকর হাতিয়ার। সঠিক সরকারি সহায়তা, রফতানি নীতি ও কাঁচামালের সুলভ সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে এই শিল্প আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ রফতানিযোগ্য শিল্প হয়ে উঠতে পারে।