অন্যদিকে মৃত মামনি রুইদাসের সন্তান গতকাল আবারও ভর্তি হয়েছিল মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে। জন্ডিস ধরা পড়ে ওই সদ্যজাতের। তবে শিশুর শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটাই ভাল। দ্রুত সুস্থ করে তোলা সম্ভব বলেই জানাচ্ছেন চিকিত্সকরা।
আরও পড়ুন: বাজার থেকে ভুলেও কিনবেন না এই ৫ মাছ! ভেতরে গিয়েই ঝাঁঝরা করছে শরীর
advertisement
প্রসঙ্গত, মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের ঘটনা নিয়ে তদন্তকারী দলের সাড়ে পাঁচ পাতার তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়েছে স্বাস্থ্য ভবনে। রিপোর্টে উল্লেখ শুধু মাত্র রিঙ্গার ল্যক্টেড স্যালাইন নয়। এর সঙ্গে রয়েছে অক্সিটোসিন। রিঙ্গার ল্যাকটেড স্যালাইনে সমস্যা ছিল। সেইসঙ্গে অক্সিটোসিনে অতিরিক্ত ডোজের ব্যবহার করা হয়। ৫ জন প্রসুতিকে দেওয়া হয় অক্সিটোসিন। ১০ থেকে ১৫ ইউনিট অক্সিটোসিন দেওয়া হয়। যেটি পরিমাণে অনেক বেশি। অক্সিটোসিনের প্রোটোকল মানা হয়নি।
মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজের অসুস্থ তিন সদ্যোজাতের মা হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। দুজনের অবস্থা অত্যন্তই আশঙ্কাজনক। মাম্পী এবং নাসরিন নামের দুই চিকিত্সাধীন সদ্যজাতের মাকে গতকাল সন্ধ্যায় ডায়ালাইসিস করা গিয়েছে। তবে দুজনেই এখনও ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। কিডনির অবস্থা অত্যন্ত খারাপ, রক্ত জমাট বাঁধা এখনও ঠিক করা যায়নি, রিভার এবং হার্টের অবস্থাও খুব ভাল নয়। রক্তচাপ স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই কমে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা? চিবিয়ে খান এই একটি পাতা, ম্যাজিকের মতো কমবে! বাড়তি পাওনা হজম বৃদ্ধি
অন্যদিকে, মিনারা বিবির শারীরিক অবস্থা সামান্য উন্নতি। তাকে নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। তার ক্ষেত্রে প্রস্রাব একদম কমে গিয়েছে। তবে তিনজনের ক্ষেত্রেই হিমোগ্লোবিনের মাত্রা অত্যন্ত কম। মাম্পি এবং নাসরিনের হিমোগ্লোবিন এক থেকে দুই-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছে অন্যদিকে মিনারা বিবির হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ৪-এর সামান্য বেশি।
প্রসঙ্গত, পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড বাড়িয়ে এখন মোট ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। পাঁচজন কিডনি বিশেষজ্ঞ বা নেফ্রলজিস্ট। একজন স্ত্রী ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ বা গাইনোকোলজিস্ট। একজন ক্রিটিকাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ। একজন জেনারেল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। একজন, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ বা কার্ডিয়লজিস্ট, একজন স্নায়ু রোগ বিশেষজ্ঞ বা নিউরোলজিস্ট। একজন চেস্ট মেডিসিনবা বক্ষ রোগ বিশেষজ্ঞ এবং একজন মাইক্রোবায়োলজি ও বায়োকেমিস্ট্রি বিশেষজ্ঞ একজন আনেসথেস্থিস্ট।
প্রসূতি মৃত্যুর পিছনে কারণ হিসেবে তদন্তে উঠে একাধিক কারণ। জানা গিয়েছে, প্রটোকল মেনে দেওয়া হয়নি অক্সিটোসিন। অক্সিটোসিন মাসেলের নিচে দিতে হয় IM পদ্ধতিতে। যদি IV পদ্ধতিতে দেওয়া হয় তাহলে সেটা অত্যন্ত ধীর গতিতে দিতে হবে। কিন্তু এখানে অক্সিটোসিন দেওয়া হয়েছে অত্যন্ত দ্রুত। যা প্রটোকলের বিরোধী। RL স্যালাইনেও সমস্যা রয়েছে। ওই রাতে সাত জন প্রসুতির ডেলিভারি হয়। চারজন অসুস্থ হয় একজন মারা যায়। বাকি দুই প্রসূতিকে হাসপাতালের ডাক্তাররা বাইরে থেকে RL স্যালাইন কিনে আনতে বলেন। ওই দুই প্রসূতি সুস্থ। ৫ জনের মধ্যে ১ জনের দেহে কম গিয়েছে RL স্যালাইন। তিনিও সুস্থ বলেই জানা গিয়েছে।