যিনি নিজের গায়ে গহনা না জুটলেও, মায়ের জন্য গহনা তৈরি করেই আনন্দ পান। তাঁর হাতে তৈরি ডাকের সাজের গহনা এখন শুধু বাংলা নয়, বিদেশেও জনপ্রিয়। বছরের পর বছর ধরে তিনি এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, যা তাঁর ভালোবাসা ও নিষ্ঠার প্রতিফলন।
আরও পড়ুন : বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন তিনবার, ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী! আজ বাঙালি ভুলতে বসেছে তাঁকে
advertisement
সামনেই গণেশ পুজো, বিশ্বকর্মা পুজো। তারপর দুর্গাপুজো, লক্ষ্মী ও কালীপুজো। এই উৎসবগুলির জন্য এখন থেকেই দম ফেলার ফুরসত নেই ঝুরিয়া গ্রামের সুমিতা গিরির। শোলার কাজ করা তাঁর নেশা, ভালবাসা এবং তাঁর পরিবারের আয়ের অন্যতম উৎস। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে যখন অভাব নিত্যসঙ্গী, তখনও তিনি তাঁর এই শিল্পকে আঁকড়ে ধরে আছেন। শোলার টুকরোগুলো দিয়ে তিনি তৈরি করেন নানা ধরনের গহনা, যেমন মুকুট, কানপাশা, নথ, হার, চুড়ি ইত্যাদি।
আরও পড়ুন : মোবাইল ছেড়ে শুধু বই চাইবে শিশুরা, জেলা গ্রন্থাগারের ‘মাস্টারপ্ল্যান’
তাঁর স্বামী ও ছেলে-মেয়েরাও তাঁকে এই কাজে সাহায্য করে। তাঁদের ছোট বাড়িটি এখন যেন এক কর্মযজ্ঞের কেন্দ্র। নিজেদের সংসারের অভাব-অনটন থাকলেও, মায়ের প্রতিমার জন্য গহনা তৈরি করতে তাঁদের ক্লান্তি নেই। যখন তিনি দেখেন, তাঁর হাতে গড়া গহনায় মায়ের প্রতিমা সেজে উঠেছে, তখন তাঁর সমস্ত কষ্ট দূর হয়ে যায়। তাঁর এই ভালবাসা ও নিষ্ঠা এখন তাঁর শিল্পের প্রধান শক্তি।
পারিবারিক সমর্থন সুমিতা গিরির এই সফলতার অন্যতম কারণ। তাঁর স্বামী বলেন, “আমার স্ত্রী একজন গৃহবধূ হয়েও যে এত সুন্দর কাজ করে, তাতে আমি খুব খুশি। এই কাজ আমাদের সংসার চালাতে সাহায্য করে, কিন্তু তার থেকেও বড় কথা হল, এই কাজ তার ভালবাসা। তাই আমরা সবাই তাকে সহযোগিতা করি।”
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
অভাবের মাঝেও শিল্প বেঁচে থাকে, এই কথাটি যেন সুমিতা গিরির জীবন দেখে সত্যি মনে হয়। তিনি একজন সাধারণ গৃহবধূ হয়েও তাঁর শিল্প দিয়ে অসাধারণ কিছু করে চলেছেন। তাঁর এই নিষ্ঠা, ভালোবাসা এবং পরিশ্রম আগামী প্রজন্মের কাছে এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।