তাদের ছাড়া কোনও দিনই বিসর্জন হয়নি দেবী প্রতিমা। এই নিয়ম আজও অটুট। পরিবারের সদস্য সিদ্ধার্থ রাজ কোঙার বলেন, ‘আন্দাজ করা যায় ৪০০ বছরের পুরানো ঠাকুর। এক ব্রাহ্মণের ঠাকুর। সে নিঃসন্তান হয়ে যায় বলে এই ঠাকুর এবং ১৬ বিঘা সম্পত্তি আমাদের এই পরিবারকে দিয়ে যায়। তার ফলে আমাদের জমিদারিরও শ্রীবৃদ্ধি হয় এবং আমাদের এই ঠাকুরেরও শ্রীবৃদ্ধি হয়। আমাদের এই পরিবারের এখন মোটামুটি ১০৮ জন সদস্য আছে। তারা পুজোর চারদিনে একদিন হলেও আসবে মায়ের দর্শন করতে’।
advertisement
আরও পড়ুনঃ খনি অঞ্চলে গড়ে উঠছে দিঘার জগন্নাথ মন্দির! মা দুর্গার আরাধনায় দুর্গাপুরে ‘বিরাট’ চমক
পুজোর সময়টা যেন সবার কাছে বাড়ি ফেরার ডাক। কর্মসূত্রে যাঁরা বিদেশে বা দূরে থাকেন, সেই কোঙার পরিবারের সদস্যরা সকলে ফিরে আসেন এই কটা দিনের জন্য। ঠাকুর দালান নতুন করে রঙিন হয়ে ওঠে, ঝাড়বাতির আলোয় ঝলমলে হয়ে ওঠে জমিদারবাড়ি। বর্তমানে জমিদারি না থাকলেও জমিদারি পুজোর মর্যাদা এখনও সমানভাবে টিকে আছে। প্রায় ৩০০ বছরের ইতিহাস বহন করছে এই পুজো। কথিত আছে, গ্রামের এক ব্রাহ্মণ প্রথম দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি জানান, আর এই পুজোর দায়িত্ব নিতে পারবেন না। তখনই গ্রামের জমিদার কাঙালকৃষ্ণ কোঙার সেই পুজোর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। সেই থেকে কোঙার পরিবারের তত্ত্বাবধানে চলে আসছে এই পুজো।
জমিদারি প্রথা আজ বিলীন হলেও, পরিবারটির কাছে এখনও পাঁচটি বড় পুকুর রয়েছে। সেই পুকুরের আয় দিয়েই প্রতি বছর চলে দুর্গাপুজো। পরিবারের সদস্য শান্তনু রাজ কোঙার বলেন, ‘আমি ছোট থেকেই এই পুজো দেখে আসছি। বাড়ির বড়দের সঙ্গে ছোট থেকেই আনন্দ উপভোগ করি। এখনও সমানভাবেই পুজোর সঙ্গে আমি জড়িত’।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
মঙ্গলকোটের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে বহু জমিদারি আমলের পুজো। কিন্তু সাঁওতার কোঙার পরিবারের দুর্গাপুজো আলাদা তার রীতি, নিয়ম আর ঐতিহ্যের জন্য। বনেদি বাড়ির পুজো মানেই কেবল আড়ম্বর নয়, সেখানে আছে গভীর ভক্তি, আছে ইতিহাসের ছোঁয়া, আছে পরিবারের মিলন আর গ্রামের মানুষদের ঐক্য। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এ এক অমূল্য সম্পদ, যা আজও সমান উজ্জ্বলতায় বহন করে চলেছে অতীতের ঐতিহ্য।





