মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগামিকালই আকাশপথে বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে যাবেন তিনি৷ বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলির পরিস্থিতি আকাশপথে ঘুরে দেখবেন তিনি৷
আরও পড়ুন: পুজোতেও বৃষ্টি? দেরিতে বিদায়ে বাড়ছে আশঙ্কা, আজ থেকেই ভাসবে উত্তরবঙ্গ
ঝাড়খণ্ডে প্রবল বৃষ্টির জেরে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়িয়েছে ডিভিসি৷ পরশুদিন রাত থেকে ডিভিসি মোট ২ লক্ষ ৭৫ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে বলে খবর৷
advertisement
যার জেরে ইতিমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা, ঘাটাল, হাওড়া, দুই বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ নানুর সহ বীরভূমের একাংশও প্লাবিত৷ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকাও জলের তলায় চলে গিয়েছে৷
ঝাড়খণ্ডে গত কয়েকদিনে প্রবল বৃষ্টির জেরেই দুর্গাপুর ব্যারেজ, মাইথন, পাঞ্চেতের মতো জলাধারগুলি থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বেড়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, 'পরশুদিন রাতে ঝাড়খণ্ডে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে৷ আসানসোলে ৩৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে৷ রাত তিনটের সময় আমাদের না জানিয়েই জল ছেড়ে দিয়েছে ডিভিসি৷ ফলে গোটা আসানসোল ডুবে গিয়েছিল৷ ঝাড়খণ্ড, বিহারে বৃষ্টি হলে আমাদের ভুগতে হচ্ছে৷ ওরা বাঁধ, খালগুলো পরিষ্কার করলে আরও জল ধরে রাখতে পারত৷ বার বার প্রতিবাদ করেও কাজ হচ্ছে না৷' হতাশ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বৃষ্টির জন্য বন্যা হলে বুঝতাম৷ কিন্তু বন্যা হচ্ছে জল ছাড়ার জন্য৷ এটা ম্যান মেড ফ্লাড৷'
মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়েছেন আসানসোলে জল কিছুটা নামলেও বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার বন্যা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক৷ পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকাতেও ডিভিসি-র ছাড়া জল ঢকেছে৷ হাওড়া, হুগলিতেও দু' দিনের মধ্যে সেই জল এসে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গতকাল ভবানীপুরে ভোট থাকলেও বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে তিনি নিয়মিত রাজ্যের মুখ্যসচিবের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন তিনি৷ ঝাড়খণ্ডের মুখ্যসচিবের সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যসচিবও কথা বলেছেন৷ সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, 'চিন্তা করবেন না, সরকার সবসময় আপনাদের কথা মনে রাখে, মনে রাখবে৷ সবরকম ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে৷'
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রীদের জেলার বন্যা পরিস্থিতির তদারকি করার জন্য পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ আগামী সোমবার বাঁকুড়ায় পৌঁছবেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ তার আগে মলয় ঘটক, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়রা বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, আসানসোলের বন্যা পরিস্থিতির উদ্ধারকাজের তদারকি করবেন৷ ফিরহাদ হাকিম, বেচারম মান্নাদের হুগলির পরিস্থিতির দিকে নজর রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ একই ভাবে পূর্ব বর্ধমানে দায়িত্বে থাকছেন স্বপন দেবনাথ, পশ্চিম মেদিনীপুরে মানস ভুঁইঞা৷
বন্যা ত্রাণের জন্য সাধারণ মানুষকে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে আর্থিক সাহায্য করার জন্যও আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলা করতে গিয়ে রাজ্যের ভাঁড়ারেও যে টান পড়ছে, তাও জানিয়েছেন উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী৷