শোনা যায় মেদিনীপুর শহর ও জেলার অন্যতম পুরনো পুজো হল এই মল্লিকবাড়ির দুর্গাপুজো।এই দুর্গাপুজোর বয়স প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি। বংশপরম্পরায় এই পুজোর আয়োজন করছে ১৩ তম প্রজন্ম। ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, এই বাড়ির পুজোর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন জন্মেয়জয় মল্লিক। তৎকালীন সময়ে মল্লিকবাড়ির পুজো প্রতিপদ থেকে শুরু হয় অর্থাৎ মহালয়ার পরের দিন থেকে শুরু হয়ে যায় দুর্গা পুজোর সূচনা। যদিও সেই পুরানো জৌলুস না থাকলেও এই প্রতিপদ থেকে শুরু হওয়া পুজোর ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে উত্তরসূরিরা।
advertisement
জানা গিয়েছে, সন্ধিপুজোর দিন কামান দাগা হত, আর যার আওয়াজে কেঁপে উঠত অবিভক্ত মেদিনীপুর। এই আওয়াজে বাকি দুর্গাপুজোর সন্ধি পুজো হত বলেই মত অনেকের। বাড়ির মেয়েরা নতুন শাড়ি পরিধান করে নানা রীতিনীতি মেনে ঘট তুলতে যেতেন। প্রতিপদ থেকে শুরু হওয়া পুজো চলত দশমী পর্যন্ত ৷ সেই সময় রুপোর গয়না পরে বের হতেন মা।মূলত একচালার প্রতিমা ডাকের সাজে সাজানো হত মৃন্ময়ী দেবীকে।
আরও পড়ুন : দুর্গাপুজোয় মিলন পার্বণের আবহে একান্নবর্তী পরিবারের রূপ নেয় চট্টোপাধ্যায় পরিবার
ফলমূল সহকারে দেবীর পুজো হয় মল্লিক বাড়িতে। বর্তমান প্রজন্মের থেকে শোনা গিয়েছে,সেই সময় বেনারস থেকে পুরোহিত এনে জাঁকজমকভাবে পুজো হত। প্রতিদিন কুড়ি মণ চালের নৈবেদ্য সাজিয়ে দেওয়া হত দেবীর সামনে । পুজোর ক’দিন বসত কীর্তন,চণ্ডীপাঠ ও কৃষ্ণযাত্রার আসর,অষ্টমীর দিন হত কুমারী পুজো। সারা বছর দূরদূরান্তে থাকলেও এই পুজোর ক’টা দিন বাড়ির সদস্যরা আসতেন তাদের পুরানো বাড়িতে। তবে প্রতিমা নিরঞ্জনে থাকত চমক। বর্ণাঢ্য ঢাক ঢোল সহকারে দেবীর বিসর্জন হত। তবে এখন আর তেমন জৌলুস নেই। আর হাতি ঘোড়া আর আসে না এই পুজোয়, নেই কামান দাগার আওয়াজ।কিন্তু আজও প্রতিপদ থেকে পুজো হয়। আজও কাঁধে চড়ে মায়ের বিসর্জন হয় দেবী মহামায়ার। বংশধরদের কাঁধে চেপে নিরঞ্জন হয় মৃন্ময়ী প্রতিমার।