জানা যায়, তাঁর বাড়ি বীরভূমের রামপুরহাট পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাউরিপাড়ায়। পরিবার সূত্রে খবর, চারদিন ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর মোবাইল বন্ধ থাকায় পরিবারের লোকজন যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। রামপুরহাট থানায় মিসিং ডায়েরিও করেছিল পরিবার। এদিকে কুম্ভে স্টিং অপারেশনের খবর পড়ে উৎকণ্ঠা আরও বাড়ে পরিবারের।
শুক্রবার সকালে পুরসভার পক্ষ থেকে পরিবারের সঙ্গে দেখা করে প্রৌঢ়াকে খুঁজে বের করার আশ্বাস দেওয়া হয়। এর পরেই বিকেল চারটে নাগাদ এলাকার একজনের কাছ থেকে কুম্ভমেলায় মৃতদের ছবি দেখে প্রৌঢ়াকে শনাক্ত করে পরিবার। তাঁরা দাবি করেন, পদপিষ্ট হয়ে গায়ত্রী দেবীর মৃত্যু হয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: ঘুমের মধ্যে আচমকা পায়ের শিরায় মারাত্মক টান পড়ে? ব্যথায় কান্না পায়? কী করলে ব্যথা কমবে জেনে নিন
থানা ও মহকুমা শাসকের কাছে মৃত্যুর খবর লিখিতভাবে জানিয়ে দেহ ফিরিয়ে আনার নিবেদন জানায় পরিবার। বিধায়ক তথা বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার রাত্রে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে তিনি জেলাশাসক ও মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলেন। তার আগে মহকুমা শাসকের সঙ্গে দেখা করে প্রৌঢ়াকে খুঁজে পেতে তৎপর হওয়ার আবেদন জানান। জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ‘আমরা এবং প্রশাসন পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। এর সত্যতা সম্পর্কে নিঃসন্দিহান হওয়ার চেষ্টা করছি। রাজ্য সরকারের নির্দেশক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প কি বাতিল হয়ে যাবে? শুনেই হাইকোর্ট যা বলল, মমতা সরকারেরই জয়জয়কার
মহকুমা শাসক সৌরভ পান্ডে বলেন, ‘প্রৌঢ়ার ছেলে আমার কাছে এসে মৃত্যুর খবর দেন। কোনওভাবে মৃত কয়েকজনের ছবি পেয়ে তিনি মাকে চিনতে পারেন। সেখানকার কোন থানার অধীনে দেহ রয়েছে সেব্যাপারে পুলিশকে খোঁজ নিতে বলেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেহ আনার ব্যবস্থা করা হবে।’ পরিবার ও সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার গায়ত্রীদেবী তাঁর বাপের বাড়ি মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান থেকে ৩১ জনের একটি দলের সঙ্গে ফরাক্কা স্টেশন থেকে ট্রেনে মহাকুম্ভের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
এরপর মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত পরিবারের লোকজন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরদিন সকালে গায়ত্রী দেবীর সঙ্গীরা তাঁর ছেলেকে ফোন করে গায়ত্রীদেবীকে খুঁজে পাচ্ছেন না বলে জানান। এরপরই দুশ্চিন্তা বাড়ে পরিবারের। বৃহস্পতিবার প্রৌঢ়ার ছেলে প্রতাপ দে রামপুরহাট থানায় মিসিং ডায়েরি করেন। প্রতাপ বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ ভাগ্নে যিশু দাসের সঙ্গে মায়ের কথা হয়েছিল।’
সেই সময় মা জানিয়েছিল, ১৭ কিমি দূরে নামিয়ে দিয়েছে। মেলার দিকে যাচ্ছে। প্রচুর ভিড়। স্নান করার পর ফোন করবে বলেও জানিয়েছিল। তারপর থেকে মাকে ফোন করা হলেও মোবাইল বন্ধ। বাকি সদস্যরা গায়ত্রী দেবীকে মেলার এদিক-ওদিক সর্বত্র খুঁজতে থাকেন। কিন্তু তাঁরা মাকে খুঁজে না পেয়ে ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরছেন। এদিকে স্টিং অপারেশনের খবর পড়ে পরিবারের চিন্তা বাড়ে। এরপরই শুক্রবার বিকেলে এলাকার বাসিন্দা ঋত্বিক ধীবর মহাকুম্ভে মৃত কয়েকজনের ছবি পান তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায়। তিনি গায়ত্রীদেবীকে চিনতে পারেন। মৃতার বাড়িতে গিয়ে সেই ছবি দেখালে তাঁরা গায়ত্রী দেবীকে শনাক্ত করেন। এরপরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।
সৌভিক রায়