তারকেশ্বরের বাবা তারকনাথ মন্দিরের সুপ্রাচীন ইতিহাস রয়েছে। শোনা যায় ১৭২৯ খ্রিস্টাব্দে মল্য রাজা বিষ্ণুদাস ও তার ভাই ভারমল্ল এই মন্দিরটি তৈরি করেন। এই মন্দির তৈরির পিছনে যে ইতিহাস বিদ্যমান তা হল, মল্ল রাজা একজন শিব ভক্ত মানুষ ছিলেন। তাদের রাজপ্রাসাদটি মন্দির থেকে তিন মাইল দূরে রামনগর গ্রামে। তার একটি গরু ছিল যার নাম ছিল কপিলা। রাজা তার গরুকে খুব ভালোবাসতেন। কপিলাকে চারণ করার জন্য এক রাখাল নিযুক্ত করা ছিল। রাখাল গরুটিকে নিয়ে প্রতিদিন জঙ্গলে গরু চারণ করতে যেতেন।
advertisement
আরও পড়ুন – Rohit Sharma Big Update: মাঠেই নামতে পারলেন না অধিনায়ক রোহিত, বড়সড় আপডেট বোর্ডের
একদিন রাজা ভারমল্ল লক্ষ্য করলেন তার গরু কপিলার দুধ দেওয়ার ক্ষমতা কমে এসেছে। তার গরু প্রথমে যা দুধ দিত তার থেকে অনেক কম দুধ দিচ্ছে। বিষয়টি তিনি তাঁর রাখালকে জানান এবং রাজদরবারে তীব্র কটাক্ষ করেন। ঘটনাটি জানার পর রাখালটি ঠিক করে কি হচ্ছে তাকে খতিয়ে দেখতে হবে। তাই সে একদিন গরুটিকে জঙ্গলে রেখে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে থাকেন। এবং তিনি দেখতে পান, গরুটি জঙ্গলের এক বিশেষ জায়গায় একটি কালো পাথরের কাছে গিয়ে গোদুগ্ধ দান করছে। এবং কালো পাথর টির মধ্যে একটি ফাটল রয়েছে যার মধ্যে দিয়ে সে গোদুগ্ধ প্রবেশ করছে। এই ঘটনা দেখার পর রাখাল তৎক্ষণাৎ রাজার কাছে পুরো ঘটনার বিবরণ দেয়। ঘটনাটি শুনে রাজার নিজেই ঠিক করেন তিনি নিজে গিয়ে ওই পাথরটি দেখবেন।
রাজা সেই পাথরটি দেখে বেশ কিছু মজুর নিযুক্ত করেন ওই পাথর থেকে তুলে নিয়ে আসার জন্য। মজুররা অনেক খোঁড়াখুঁড়ির পরেও ওই পাথরটিতে ওই স্থান থেকে তুলে নিয়ে আসতে অক্ষম হয়। তারপর একদিন রাতে রাজার স্বপ্নে স্বয়ং মহাদেবের বলেন যদি তিনি মহাদেবের ভক্ত হন তাহলে ওই স্থানে পাথরটি কে কেন্দ্র করে মহাদেবের মন্দির তৈরি করেন। স্বপ্নাদেশ পাওয়ার পর রাজা ভারমল্ল মন্দিরটি নির্মাণ করেন।তারপর থেকেই ওই স্থানে চলে আসছে বাবা তারকনাথের পুজো। প্রচুর ভক্তরা তাদের দুঃখ-দুর্দশা নিবারনের জন্য বাবার কাছে আসেন। তাদের বিশ্বাস বাবার মাথায় জল ঢেলে যদি মনস্কামনা করা হয় তাহলে সেটা নিশ্চয়ই পূরণ হবে। মন্দির সংলগ্ন একটু দুধ পুকুর রয়েছে যেখানে স্নান করে ভক্তরা বাবার কাছে জল ঢালতে আসেন। শিবরাত্রির দিনে বাবা তারকনাথের মন্দির এক উৎসবে স্থানে পরিণত হয়। লাখো লাখো ভক্তরা ভিড় জমান তারকেশ্বরে।
Rahi Halder