আরও পড়ুন: জম্মু-কাশ্মীরের খুনি নালা, নিখোঁজ বাংলার ৫ শ্রমিক কোথায় গেলেন? তুমুল রহস্য ভূস্বর্গে
দেহ ময়নাতদন্তে পাঠালে যুবতীর উরুতে মেহেন্দী দিয়ে লেখা বেশ কয়েকটি ফোন নম্বর ও 'করণ' বলে একটি নাম পাওয়া যায়। এরপরই মোবাইল নম্বারের সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পারে যুবতীর নাম জাহানারা খাতুন (১৯)। বাড়ি বিহারের মুজাফফর জেলার মোশাহারী চক এলাহাদাদ গ্রামে। কেসের সরকারী আইনজীবি সঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, গ্রামেরই করণ কুমারের সঙ্গে ওই যুবতীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ভীনধর্মে প্রেমের সম্পর্ক মানছিল না যুবতীর পরিবার। তার জন্য যুবতীর উপর অত্যাচার চালানো হত। এমনকি যুবতী দু'বার করনের বাড়িতে পালিয়েও যায়। যুবকের বাড়ি থেকে ফিরিয়ে এনে যুবতীকে এরপর শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হত বলে অভিযোগ। পরে কলকাতায় বিয়ে দেওয়ার নাম করে যুবতীকে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হয় যুবতীর বাবা মহঃ মোস্তোফা ও দাদা মহঃ জাহিদ।
advertisement
আরও পড়ুন: হঠাৎ নবান্নে জরুরি বৈঠকের ডাক! কী এমন ঘটল? কারা থাকছেন সেখানে?
রাস্তায় যুবতীকে নৃশংসভাবে খুন করে দেহ পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের নবগ্রামের ময়না এলাকায় দু নং জাতীয় সড়কের ধারে ফেলে পালিয়ে যায় বাবা ও দাদা। এরপর পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। ১০ দিনের মধ্যেই মূল অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে ফেলা হয়। তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে তদন্তকারী অফিসাররা কলকাতার বেনিয়াপুকুর এলাকা থেকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত তরুণীর দাদা জাহিদকে গ্রেফতার করে। তাঁকে জেরা করে বাবা মুস্তাকের জড়িত থাকার কথাও জানা যায়। এর পর কলকাতার তিলজলা এলাকায় হানা দিয়ে মুস্তাককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই দু’জনকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে 'করণ’ হল জাহানার প্রেমিক। সে ভিন ধর্মের জেনেও জাহানা তাঁকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। তা মেনে নিতে না পেরেই জাহানাকে তারা খুন করে।
যদিও অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবি চৌধুরী নাজমে আলম জানিয়েছেন, এই রায়ের বিরুদ্ধে তারা উচ্চ আদালতে যাবেন। অন্যদিকে তাদের ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবী করেন বোন কে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রাপ্ত যুবতীর দাদা মহঃ জাহিদ। বর্ধমান ফাস্ট ট্রাক কোর্টের বিচারক সুব্রত চ্যাটার্জীর এজলাসে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২,২০১ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। দীর্ঘদিন বিচার প্রক্রিয়া চলার পর অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় বিচারক সুব্রত চ্যাটার্জী অভিযুক্তদের সশ্রম কারাদন্ডের নির্দেশ দেন।