ঘটনাস্থল গোয়ালপাড়া তনয়েন্দ্র উচ্চ বিদ্যাপীঠ, শান্তিনিকেতন। অভিযোগ, স্কুলের প্রায় সাড়ে ৪ কাঠা জমি জবরদখল করে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রেখেছেন স্থানীয় এক রিসর্ট মালিক ভরত ঘোষ। দীর্ঘদিন ধরে এই জমি ছিল বিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত, অথচ এখন তার একাংশে উঠে এসেছে দোকানঘর!
বর্ষায় জমিতে নামলেই সাপের ভয়? ৬ ফুটের জিনিসটা মাটিতে ছুঁড়লেই লেজ গুটিয়ে পালাবে ইয়া বড় বড় বিষধর!
advertisement
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনাথবন্ধু মণ্ডল জানাচ্ছেন, একাধিকবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল মেলেনি। জেলা শাসক, বিদ্যালয় পরিদর্শক থেকে শুরু করে শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদ—সব মহলেই চিঠি গিয়েছে। তবুও জমি ফেরত মেলেনি স্কুলের।
এর আগেই স্কুলের চারপাশে প্রাচীর গড়ার জন্য সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছিল। কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ‘দিদিকে বলো’ টোল ফ্রি নম্বরে অভিযোগ করেন শিক্ষকরা। তাতেই নড়ে চড়ে বসে প্রশাসন। এরপর বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল তাঁর তহবিল থেকে ৩৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন বিদ্যালয়ের চারদেওয়ালের জন্য। সেই অনুযায়ী, শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদের তরফে শুরু হয় প্রাচীর নির্মাণের কাজ।
আর সেখানেই ফাঁস হয়ে যায় জমি কেলেঙ্কারি। সীমানা চিহ্নিত করতে গিয়ে ধরা পড়ে—স্কুলের তিন একরের কিছুটা কম জমির মধ্যে ৩টি প্লট-এর প্রায় সাড়ে চার কাঠা জমি ইতিমধ্যে বেহাত হয়ে গিয়েছে।
বিদ্যালয়ের তরফে ২৮ হাজার টাকা খরচ করে সীমানা নির্ধারণের কাজ করা হয়। রিপোর্টেই স্পষ্ট—বিদ্যালয়ের একাংশ জমি জবরদখল করে নিয়েছেন ওই রিসর্ট মালিক ভরত ঘোষ। তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ তিনি। ফোনে যোগাযোগ করা হলে মন্তব্য করতে চাননি। (তাঁর নম্বর অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপে সংরক্ষিত রয়েছে।)
স্থানীয় সূত্র বলছে, জমি মাফিয়াদের দাপটে শান্তিনিকেতন নতুন কিছু দেখছে না। সরকারি জমি হোক বা আদিবাসীদের, দখল করে নির্মাণ চলছেই। তবে এবার সরকারি স্কুলের জমি বেহাত হওয়ায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
এখন প্রশ্ন একটাই—বিদ্যালয়ের জমি ফিরিয়ে দিতে কতটা সক্রিয় হবে প্রশাসন? আর শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশে কি ফিরে আসবে শান্তিনিকেতন?
এখনও পর্যন্ত কোনও স্থায়ী সমাধান না হওয়ায় উদ্বিগ্ন শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। সকলের প্রশ্ন—সরকারি জমিতেও যদি নিরাপত্তা না থাকে, তবে আদৌ আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে?