তবে খড়দহ বিধানসভার পাতুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা দীপালি সাঁতরা যেন সকলের চোখ খুলে দিয়েছে, লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প থেকে পাওয়া ৫০০ টাকা করে জমিয়ে। বুদ্ধির জোরে আজ তার সংসার ভাল ভাবেই চালাচ্ছেন। কারণ, সেই টাকা দিয়ে তিনি একটি ফুলের দোকান চালু করেছেন। যার নাম রেখেছেন ‘লক্ষীর ভান্ডারের ফুল’।
আরও পড়ুনঃ হাড় জিরজিরে চেহারা, আষ্টেপৃষ্টে ধরেছে অপুষ্টি! সুস্থ হওয়ার পথ বলে দিলেন চিকিৎসক
advertisement
দোকানটি বর্তমানে স্বামী ও ছেলের হাতে তুলে দিয়েছেন চালানোর জন্য। নিজে বাড়িতে বসে সংসার সামলানোর পাশাপাশি ফুলের মালা তৈরি করেন নিজেই। ফুলে দোকানের কাজ তিনজনেই ভাগ করে নিয়েছেন। স্বামী দোকানে বসেন, ছেলে হাওড়া মার্কেট থেকে ফুল নিয়ে আসে, এবং দীপালি সাঁতরা তা বাড়িতে বসে মালা গেঁথে রেডি করে দোকানে বিক্রির জন্য পাঠান। ছেলে আবার অর্ডার অনুযায়ী সেই ফুল হোম ডেলিভারিও দেয়।
আরও পড়ুনঃ আপনার গিজার ঠিকঠাক কাজ করছে? এই ৪ লক্ষণ দেখলে বুঝবেন পাল্টানোর সময় এসেছে
তবে, কীভাবে শুরু হল? করোনার সময় আচমকাই দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে গাড়ি চালানোর কাজ বন্ধ হয়ে যায় স্বামী দিলীপ সাঁতরার। ঘরে বসে পরেন লকডাউনের সময়ে। দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে ভিনরাজ্যে কাজ করে, সে যা আয় করে তা দিয়ে নিজের কোনওরকম চলে যায়। সংসার কীভাবে চলবে তার কুলকিনারা খুঁজে না পেয়ে, করুন পরিস্থিতির মধ্যে পরে সাঁতরা পরিবার। সেইসময় পাতুলিয়া এলাকায় দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে লক্ষ্মীর ভান্ডারের ফ্রম দেওয়া হচ্ছিল। সেখানে ফ্রম ফিলাপ করলে ৫০০ টাকা করে পাওয়া যেতে পারে এই ভাবেই, দীপালি দেবী ছেলেকে বলে ফর্ম আনার জন্য।
ফর্ম ফিলাপ করে জমা দেওয়ার পরই চালু হয় মাসিক ৫০০ টাকা হাত খরচ পাওয়া। সেই টাকা ৫ মাস জমানোর পরেই ছেলেকে বলে একটি ফুলের দোকান করতে, যার খরচ তিনিই দেবেন। সংসারের হাল ধরতে পরিবারকে নিয়ে লড়াই শুরু করেন দীপালি সাঁতরা। দোকানের নাম কি দেওয়া হবে! দীপালী দেবী নামও ঠিক করে ফেলেন ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারের ফুল’। সেই ব্যবসায় আজ ভালভাবেই চলে যাচ্ছে তিনজনের সংসার। সবসময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ দিতে ভুল করেন না সাঁতরা পরিবার। ছেলে সুরজিৎ সাঁতরা মায়ের এই চিন্তাভাবনা এবং সহযোগিতায় গর্ববোধ করেন।
ফুলের পাশাপাশি বর্তমানে এখন দোকানে জলের বোতল, ছাতুর শরবত-সহ অন্যান্য জিনিসও পাওয়া যায়। দিপালী দেবী মনে করেন, তাকে দেখে এই বাংলার আরও মহিলারা এগিয়ে আসবে। তারাও দিদির দেওয়া এই লক্ষ্মীর ভান্ডারের অর্থে স্বনির্ভর হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের হাত খরচের জন্য দিয়েছিল লক্ষ্মীর ভান্ডার, আজ সেই অর্থেও যে গোটা একটি পরিবার ঘুরে দাঁড়াতে পারে তার যেন জলজ্যান্ত উদাহরণ পাতুলিয়ার দীপালি সাঁতরা।
Rudra Narayan Roy