মুর্শিদাবাদে দীর্ঘদিন ধরেই আর্সেনিক একটা বড় আতঙ্ক। শুধুমাত্র নলকূপের জল খেয়েই নয়, আর্সেনিক শরীর ঢুকছে ফসলের মাধ্যমেও। কারণ, চাষের জন্য যে ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতেও রয়েছে আর্সেনিক। রেহাই পাচ্ছে না ধানও। ফলে এখন ভাত খেতে গিয়েও আতঙ্ক।
ফসলের মাধ্যমে আর্সেনিক শরীরে ঢোকায় আতঙ্কটা আরও বেশি। কারণ, মুর্শিদাবাদের চাল বা নানা ধরনের সব্জি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেই বিক্রি হয়।
advertisement
- মুর্সিদাবাদের চাল, লঙ্কা, বেগুন-সহ নানা ফসল প্রতিদিনই কলকাতা, নদিয়া এবং উত্তরবঙ্গের সবক’টি জেলার বাজারেই পৌঁছে যায়।
-এই ফসল খাওয়া মানেই শরীরে ঢুকবে আর্সেনিকের বিষ।
-একসময় মুর্শিদাবাদের চাল বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুরে রফতানি হত।
-কিন্তু, আর্সেনিকের প্রকোপে কালো দাগওয়ালা সেই চাল এখন মুর্শিদাবাদেরই অনেক বাতিল করেছেন
-অথচ, কলকাতা বা অন্য জেলার মানুষ সেই চালই খাচ্ছেন না বুঝে।
-এভাবেই মানুষের অজান্তেই শরীরে ঢুকছে আর্সেনিকের বিষ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাটির তলার জল বেশি তুলে নেওয়ার জেরেই আর্সেনিকের এমন প্রকোপ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজের অতি সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুূযায়ী, ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাওয়া এবং আর্সেনিকের প্রকোপ - এই দুইয়ের নিরিখে রাজ্যের সমস্ত জেলার মধ্যে মুর্শিদাবাদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। মুর্শিদাবাদের ২৬টি ব্লকের সবক’টিতেই জলস্তর ক্রমশ নামছে। প্রতি বছর গড়ে ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমছে আট থেকে ১০ ইঞ্চি। এর জেরে ভরতপুর ২ ছাড়া মুর্শিদাবাদের ২৬টি ব্লকের মধ্যে ২৫টিতেই আর্সেনিকের সাংঘাতিক প্রকোপ। ২৫টি ব্লকেই মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত আর্সেনিক।
শরীরে আর্সেনিকের বিষ ঢোকা মানে নানা ধরনের রোগের আশঙ্কা।
অনেকের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবার আগে, মাটির নীচ থেকে ইচ্ছে মতো জল তোলা বন্ধ করতে হবে। বা়ডাতে হবে সচেতনতা। না হলেই বিপদ। এভাবে চললে মুর্শিদাবাদের ভরতপুর ২ ব্লক-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতেই আর্সেনিক চোখ রাঙাবে।