কার্তিক পুজোকে কেন্দ্র করে আলোর বন্যায় ভাসছে কৃষি প্রধান প্রান্তিক শহর কাটোয়া। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে নান্দনিক প্যান্ডেল, শহরের প্রবেশ পথে সুউচ্চ দাঁড়িয়ে থাকা আলোর তোরণ আপনাকে স্বাগত জানাবে। নজর কাড়া আলোকসজ্জায় কৃষি শহরের পথ-ঘাটের চেহারার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। কোথাও বাঁশ দিয়ে লুপ্তপ্রায় বাংলার ডোকরা শিল্পকে তুলে ধরা হয়েছে, আবার কোথাও বেত ও ফাইবারের সুচারু কাজের সুদৃশ্য প্যান্ডেল। কোথাও প্লাস্টিক বোতল দিয়ে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। থাইল্যাণ্ডের মিউজিয়ামের আদলে মণ্ডপ, দক্ষিণ ভারতের মন্দিরের আদলে সুদৃশ্য প্যাণ্ডেল কাটোয়া শহরের গর্ব বাড়িয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন : স্কুল নয় যেন ছোট্ট ফুড মার্কেট, পড়ুয়ারা হাতেকলমে শিখল বিজনেস পলিসি! চিকেন ফুচকায় লাভ ১৪০ টাকা
উদ্যোক্তারা কার্তিক মূর্তিক শোলার কাজ দিয়ে সাজিয়েছেন। কোথাও প্যারিসের ডিজনিল্যান্ডের আদলে মন্ডপ তৈরি হয়েছে, আবার কোথাও কাঠের পুতুল, বাঁশের ফুল সহযোগে দিয়ে তৈরি প্যাণ্ডেল কাঠশিল্পকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে। কাল্পনিক মন্দিরের আদলে নান্দনিক প্যান্ডেলে শিল্পকর্ম দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে শহরে ১০টি পুলিশি সহায়তা কেন্দ্র করা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে পুলিশ কর্মী আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার সায়ক দাস। মোতায়েন করা হয়েছে এক হাজার পুলিশ কর্মী। কার্তিকের শোভাযাত্রা রুটে সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার সায়ক দাস।
আরও পড়ুন : একাকী বৃদ্ধার ওপর অমানবিক অত্যাচার নাদনঘাটে, গ্রেফতার প্রতিবেশী যুবক! ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকা
উল্লেখ্য, শোভাযাত্রাকে ‘লড়াই’ নামে ডাকা শুরু হয়েছিল বিংশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে। আদি কাটোয়ার যখন কার্তিকের ‘থাকা’ বাঁশের সাঙ বেঁধে বাবুদের ভাড়া করা বেহারার দল বহন করত, তখন নগরের স্বল্প পরিসর রাস্তায় বের হয়ে কোন বাবুর ‘থাকা’ আগে যাবে, তার একটা সুস্থ প্রতিযোগিতা হত। সেই দৃশ্য ছিল উপভোগ করার মতই। সেটাই পরবর্তী কালে লড়াই নামে খ্যাতি লাভ করে। শোভাযাত্রায় সেই সাবেক প্রথা না থাকলেও আজও সেই পরম্পরা মেনেই কাটোয়ার কার্তিকের শোভাযাত্রাকে কার্তিক লড়াই বলা হয়। এবারের প্রশাসনের অনুমোদিত পুজোর সংখ্যা ৮৭ হলেও, কাটোয়া শহরে কম বেশি প্রায় দেড়শো পুজো হচ্ছে ।
