নারীকে ঘিরে অবহেলা, বঞ্চনা ও নির্যাতনের যে কঠিন বাস্তব আজও সমাজের প্রতিটি স্তরে বিরাজ করছে, সেই দিকেই আঙুল তুলেছে এই ভাবনা। পরিবার হোক বা কর্মক্ষেত্র, সর্বত্রই নারী সমান মর্যাদার দাবিদার হলেও তাঁরা প্রায়শয়ই সেই সম্মান পান না। কখনও কন্যাভ্রূণ হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ তাঁদের অস্তিত্ব মুছে দেয়, কখনও ধর্ষণের মতো বিভীষিকাময় ঘটনা তাঁদের জীবনের স্বপ্ন ও নিরাপত্তা কেড়ে নেয়, কখনও আবার সামাজিক কুসংস্কার ও বৈষম্য তাঁদের পথ আটকে দেয়। এই সমস্ত অন্ধকার দিককে শিল্পের ভাষায় ফুটিয়ে তুলতে চাইছেন শিল্পীরা।
advertisement
আরও পড়ুনঃ ‘আবার এসো মা’! দেবীর বিদায়বেলায় ভক্তদের চোখে জল, আবেগে ভাসল আট থেকে আশি! ছবিতে দেখুন
মণ্ডপে নারী অত্যাচারের প্রতীকী চিত্র ধরা পড়েছে। সেখানে একদিকে সমাজের অমানবিক রূপ, অন্যদিকে নারীশক্তির জাগরণ দেখা যাবে। তুলির আঁচড়, মাটির গড়ন ও আলোর ছটায় শিল্পীরা এক নতুন ভাবনার জগৎ তুলে ধরছেন। দর্শনার্থীরা মণ্ডপে প্রবেশ করতেই নারীর বেদনা অনুভব করেছেন। সেইসঙ্গেই নারীর শক্তি ও সম্ভাবনার বার্তাও তাঁদের হৃদয়ে পৌঁছে গিয়েছে।
মেদিনীপুরের ক্লাব স্বদেশভূমির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল সাহসী ও সমাজমুখী থিম। প্রতি বছরই অভিনব চিন্তাভাবনা দিয়ে তাঁরা নজর কাড়ে। বিগত কয়েক বছরে একাধিকবার জেলার সেরা হওয়ার কৃতিত্বও অর্জন করেছে স্বদেশভূমি। তাঁদের মতে, শুধু আনন্দে পুজো করা নয়, মানুষের মধ্যে সচেতনতা জাগানোও সমান জরুরি। তাই এবারের থিমের মাধ্যমে তাঁরা সমাজের কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন, আজও কেন নারীকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকের মতো দেখা হয়? কেন তাঁদের স্বপ্ন বারবার দমন করা হয়?
এবারের পুজোয় ক্লাব কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস রাখছেন, এই বার্তা মানুষের মননে আলোড়ন তুলবে। নারীশক্তির মর্যাদা রক্ষায় সমাজকে আরও এগিয়ে আসতে হবে, এই চেতনা প্রতিটি দর্শনার্থীর মনে নাড়া দেবে। শুধু দুর্গাপুজোয় নয়, বছরের প্রতিটি দিনে নারীকে যথাযোগ্য সম্মান দেওয়া হোক, এই আশা রেখেই মণ্ডপ সাজিয়েছেন তাঁরা।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ক্লাবের অন্যতম কর্মকর্তা তরুণ জানা বলেন, “আমরা চাই এই থিমের মাধ্যমে সমাজে নারীকে সম্মান দেওয়ার বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক। পুজো শুধু আনন্দের নয়, পুজো হোক চেতনার। নারীকে অবহেলা করলে সমাজ এগোতে পারে না আর নারীকে মর্যাদা দিলে সমাজ আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।”