নতুন প্রজন্মের মধ্যেও আগ্রহ নেই এই কাজে। তবে সেই স্রোতের ঠিক উল্টো পথে হাঁটছে ভাগ্যশ্রী। পড়াশোনার পাশাপাশি যখনই সময় পায়, বসে পড়ে তাঁতের সামনে। নিখুঁত হাতে বুনে চলে রঙিন জামদানি শাড়ি। ভাগ্যশ্রী এই প্রসঙ্গে জানিয়েছে, ‘আমার জামদানি বুনতে খুব ভাল লাগে। মায়ের কাছে এই কাজ শিখেছি। পড়াশোনার বাইরে সময় পেলেই আমি এই কাজ করি। তিন বছর ধরে এই কাজ করছি। আমার কাজটা করতে ভাল লাগে আর পড়াশোনার খরচও উঠে যায়। পড়াশোনা করি, বাড়ির কাজও করি আবার শাড়িও বুনি।’
advertisement
তার বোনা শাড়ি শুধুই শিল্প নয়, সেটা হয়ে উঠেছে তার স্বপ্ন পূরণের সিঁড়ি। সেই শাড়ি বিক্রি করেই সে নিজের পড়াশোনার খরচ চালায়। শুধুমাত্র একটি শাড়ি নয়, ভাগ্যশ্রীর তৈরি বহু শাড়ি বিক্রি হয়েছে ভাল দামে। একজন কিশোরী ছাত্রী হয়েও এত বড় দায়িত্ব নেওয়া, এবং বাংলার ঐতিহ্যকে আঁকড়ে ধরে রাখা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। ভাগ্যশ্রীর মা সুনিতা দাস জানিয়েছেন, ‘ও কোথাও ঘুরতে যায়না। সময় পেলেই চলে আসে শাড়ি বুনতে। আমারও ভাল লাগে যে ও এই কাজ করছে সেটা দেখে। ঘরের কাজ, পড়াশোনা, শাড়ি বোনা সবই করে।’
ভাগ্যশ্রী প্রমাণ করে দিয়েছে ইচ্ছা থাকলে, কোনও কাজই ছোট নয়। মোবাইলের নেশায় ভেসে না গিয়ে, নিজের ভবিষ্যত ও সংস্কৃতিকে রক্ষা করার এই প্রচেষ্টাও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া উচিত। হোক সে ভাইরাল, যাতে আরও অনেক পড়ুয়া অনুপ্রাণিত হয়। কে জানে, ভাগ্যশ্রীর হাতে বোনা এই জামদানিই একদিন বদলে দেবে তার ভাগ্য এবং একইসঙ্গে আরও উজ্বল করে তুলবে বাংলার এই ঐতিহ্যকেও।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী