গবেষক মধুপ দে বলেন, ‘‘এটি একটি জৈনদের একটি প্রত্নক্ষেত্রের নিদর্শন। মূলত নদী তীরবর্তী এলাকায় জৈন সম্প্রদায়ের মানুষজন বসবাস করতেন। রাজপাড়া এলাকায় যে জৈন মন্দির বা দেউল ছিল, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। জৈনরা তাঁদের দেহাবশেষ মাটির কলসিতে ভরে মাটিতে পুঁতে রাখতেন। তার উপরে দু’-পাঁচ ফুটের নিবেদন বা মানত শিলা পুঁতে দেওয়া হত। স্থানীয়রা মূর্তিটিকে সত্যনারায়ণ বা বিষ্ণু দেব রূপে পুজো করেন। মূর্তিটির পুরোহিত হলেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের শবর দেহরী। মূর্তিটির বৈশিষ্ট্য, মূর্তিটির মাথার পিছনে রয়েছে পঞ্চমুখী সাপের মুখ।
advertisement
গ্রামের বাসিন্দা জ্যোতি মাহাতো বলেন, জায়গাটি ‘গ্রামথান’ নামে পরিচিত। এখানে মাকড়া পাথরের একাধিক স্তম্ভ ও একটি ভগ্ন মূর্তি পড়ে রয়েছে। এই এলাকায় মাটি খুঁড়লে কলস পাওয়া যায়। মাটির নীচে এমন ধরনের কলস থাকার কারণ আমাদের কাছেও স্পষ্ট নয়। গবেষক বিধান দেবনাথ বলেন, ঝাড়গ্রামের বিনপুর দুই নম্বর ব্লকের এড়গোদা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজপাড়া একটি প্রাচীন জনপদ। এই এলাকা ছেড়ে জৈনদের চলে যাওয়ার কারণ আজও অজানা। তাম্রলিপ্ত বন্দরের অবক্ষয়, পরবর্তীকালে রাজনৈতিক অস্থিরতা বা বৈষ্ণব ও শৈব আন্দোলনের প্রভাবে জৈনরা এই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে পারেন। তবে, ভগ্ন দেউল ও কলসগুলি আজও সুদূর অতীতের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।
আরও পড়ুন : সাপ কেন তার চেরা জিভ ঘন ঘন বাইরে বার করে? ‘আসল কারণ’ জানলে আতঙ্কে কাঁটা হয়ে যাবেন! হাড়হিম ভয়ে রক্ত জল!
সুদুর অতীতে এই স্থানে জৈন দেউল ছিল। দেউলের পাশে ছিল শ্মশানভূমি। জৈনরা দেবতাদের উদ্দেশে নিবেদন শিলা উৎসর্গ করতেন। দেহাবশেষের সঙ্গে মুদ্রা, চামচ ও অন্য সামগ্রী কলসে ভরে মাটির পাঁচ ফুট গভীরে পুঁতে দেওয়া হত। জায়গাটি গ্রামবাসীদের কাছে আজও রহস্যময়। গ্রামবাসীদের দাবি স্থানটি ইতিহাস সমৃদ্ধ, অবিলম্বে এখানে নানা রহস্য লুকিয়ে আছে। তাই স্থানটিকে অবিলম্বে যেন সরকারিভাবে সংরক্ষণ করা হয়।