ঝাড়গ্রাম শহরের ঘোড়াধরা এলাকার বাসিন্দা সুবীর বিশ্বাস দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে শিল্পী চর্চার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। প্রথমে তিনি কাঠ, গাছের শিকড়, বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন ভাস্কর্য ফুটিয়ে তুলতেন ।পরে একদিন জুতো সেলাই করাতে গিয়ে দেখেন জুতো সেলাইয়ের অস্ত্র স্লেটের ওপর শান দেওয়া হচ্ছে। তারপর তিনি তাঁর অস্ত্র ধার দেওয়ার জন্য স্লেটের ব্যবহার করতে থাকেন। ব্যবহার করতে গিয়ে দেখেন ধার দেওয়ার পরে স্লেটের মধ্যে বিভিন্ন আকৃতি ফুটে উঠছে। তারপরেই শুরু হয়ে যায় স্লেট নিয়ে শিল্পীর চর্চা। তিলে তিলে নিজেকে স্লেটের উপর দক্ষ করে তুলেছেন সুবীর। আর তার সেই দক্ষতায় বাস্তবের চেহারার রূপ নেয় বিশাল আকৃতির দুর্গা গড়ার মধ্য দিয়ে।
advertisement
প্রায় এক বছর ধরে দিবারাত্রি এক করে অসংখ্য ছোট ছোট স্লেটকে এক সূত্রে বেঁধে খোদাই করে তৈরি করেন দুর্গার চিত্র। জানা গিয়েছে, ৮ ফুট উচ্চতা এবং ৬ ফুট চওড়ার দুর্গার ছবি খোদাই করতে প্রায় ১০০টি স্লেট ব্যবহার হয়েছে। এছাড়াও লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক,সরস্বতীর রূপ খোদাই করতে এক একটিতে ৬০ থেকে ৭০ টি করে স্লেট লেগেছে। প্রায় ৪০০ টি স্লেটে খোদাই করে সপরিবারে দুর্গাকে ফুটিয়ে তুলেছে ঝাড়গ্রামের সুবীর।সুবীর বিশ্বাস বলেন, “আমি মাতৃ শক্তির আরাধক । আমার পুঁথিগত বিদ্যা বেশি দূর নেই । তাই আমি শিল্পচর্চার উপর নির্ভর করেই চলতে ভালবাসি। স্লেট খোদাই করে বিভিন্ন চিত্র ফুটিয়ে তোলার কাজ আমি নিজেই শিখেছি।”
আরও পড়ুন : রুপোর পাখায় বাতাস, রুপোর সম্মার্জনীতে ধুলো পরিষ্কার, ৩০০ বছরের সাবেক পুজোয় আজও উড়ে যায় নীলকণ্ঠ
প্রথমে ছোট ছোট স্লেটকে খোদাই করে বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তি ,সাহিত্যিকের ছবিও ফুটিয়ে তুলতেন তিনি। পরে বড় দুর্গার মূর্তি তৈরির ভাবনা চিন্তা মাথায় আসে তাঁর।এর পর দীর্ঘ এক বছর ধরে ৪০০-রও বেশি স্লেট খোদাই করে দুর্গার ছবি ফুটিয়ে তোলেন তিনি। ৪০০ স্লেট খোদাই করে সপরিবারে দুর্গার ছবি ফুটিয়ে তোলার পর এবার ১০০ টি দুর্গা স্লেটর মধ্যে ফুটিয়ে তুলতে চাইছেন সুবীর।