চন্দ্রকোনা মিলন মেলা কমিটির পরিচালনায় জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। এবছর চন্দ্রকোনার সুরের হাট মাঠের জগদ্ধাত্রী পুজো ও মিলন মেলা নবম বর্ষে পদার্পণ করল। এই উপলক্ষ্যে একটি শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে রুক্মিণী মৈত্র পুজোর উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: তারাপীঠের কাছেই ‘জাগ্রত’ মা জগদ্ধাত্রী! ৪০০ বছরের পুরনো পুজো, বীরভূম ঘুরতে এলে মিস করবেন না
advertisement
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এই বছর নবম বর্ষে পদার্পণ করল চন্দ্রকোনা সুরেরহাট মিলন মেলা কমিটির এই জগদ্ধাত্রী পুজো। পুজোকে ঘিরে কয়েকটি দিন অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন এলাকায় করা হয়েছে। পুজোকে ঘিরে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বসে মেলা, যা এলাকার মানুষের জন্য একটি উৎসব বলা চলে।বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণের একটি জগদ্ধাত্রী পুজো যা দেবী দুর্গার একটি রূপ জগদ্ধাত্রীকে উৎসর্গ করা হয়। বাংলায় জগদ্ধাত্রী পুজোর ইতিহাস বেশ পুরনো এবং আকর্ষণীয়। এই পুজোটি দেবী জগদ্ধাত্রীকে উৎসর্গ করা হয়, যিনি দেবী দুর্গার একটি রূপ। বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্র এবং লোককথা অনুসারে, বাংলায় জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা হয়েছিল প্রথম নদিয়ার কৃষ্ণনগরে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের হাত ধরে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
একটি জনপ্রিয় কাহিনি অনুসারে, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় ব্রিটিশদের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন এবং নবাব মীর কাশিমের হাতে বন্দি হন। বন্দি দশায় তিনি দুর্গাপুজোয় অংশগ্রহণ করতে পারেননি, যা তাঁকে গভীরভাবে মর্মাহত করে। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন। অনেকের মতে, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পুজো দেখে মুগ্ধ হয়ে ফরাসি দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন। তবে এখন শুধু চন্দননগর কিংবা কৃষ্ণনগর না দিকে দিকে পালিত হচ্ছে জগদ্ধাত্রী উৎসব। পশ্চিম মেদিনীপুরও তার অন্যথা নয়। এখানেও বেশ জাঁকিয়ে চলছে পুজো। তবে কিছু ঐতিহাসিক সূত্র এবং প্রাচীন গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে, জগদ্ধাত্রী পুজো কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের অনেক আগে থেকেই বাংলায় প্রচলিত ছিল। প্রাচীন মন্দিরের গাত্রে জগদ্ধাত্রীর মূর্তি এবং বিভিন্ন পুঁথিতে দেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়।
জগদ্ধাত্রী পুজো বর্তমানে বাংলার অন্যতম প্রধান উৎসব, যা দেবী জগদ্ধাত্রীর প্রতি ভক্তি এবং সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। চন্দ্রকোনা সুরেরহাট মিলন মেলা কমিটির এই জগদ্ধাত্রী পুজো ও মিলন মেলা এলাকার মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান, যা তাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ঐক্য গড়ে তোলে।





