এই পুজোর শুরু কিভাবে সেই ইতিহাস খুঁজলে জানা যায়, কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দেওয়ান দাতারাম সুর গৌরহাটিতে বাস করতেন। তিনি রাজা কৃষ্ণ চন্দ্রের অনুমতি নিয়ে দুই বিধবা কন্যাকে নিয়ে নিজের বাড়িতে জগদ্ধাত্রী পুজো করেন। পরবর্তীতে ব্যক্তিগত পুজো চলে আসে বারোয়ারির রূপে, তৈরি হয় তেঁতুলতলা বারোয়ারি। এখানে দেবী পূজিতা হন তন্ত্রমতে। প্রতি বছর পুজো শুরুর আগে প্রতিমা তৈরি হয়ে গেলে প্রতিমাকে কাপড় পড়ানো হয়। বেনারসিতে সাজিয়ে তোলা হয় বুড়িমাকে। কয়েক হাজার শাড়ি পরেন তিনি। এই বছরও ঘটেনি তার ব্যতিক্রম। প্রায় ২২৫টি বেনারসি শাড়িতে সেজে উঠছেন তেঁতুলতলার বুড়িমা।
advertisement
আরও পড়ুনঃ রোজ ঠিক এই সময় একটি আমলকি, ব্যাস…! ফর্সা, তুলতুলে নরম, ফুটফুটে ত্বক! হুড়মুড়িয়ে কমে ওজন, কোলেস্টেরল
এ প্রসঙ্গে পুজো উদ্যোক্তা বলেন, প্রতিবছরই চতুর্থী, পঞ্চমীর দিনে মাকে কাপড় পরানো হয়। বহু ভক্ত শাড়ি দান করেন সেই শাড়ি পরানো হয়। মূলত বেনারসি শাড়িতে সেজে ওঠেন সকলের প্রিয় বুড়িমা। এ বছর প্রায় ২২৫টি বেনারসি শাড়ি পরানো হবে তাঁকে। প্রত্যেক বছর প্রায় বেনারসি, ছাপা শাড়ি ও অন্যান্য শাড়ি মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজারের কাছাকাছি শাড়ি থাকে মায়ের জন্য। মানুষের মনে এক বিশ্বাস আছে যেখানে বলা হয় তেঁতুলতলা বুড়ি মায়ের যে শাড়ি সেই শাড়ি পরলেই নাকি অবিবাহিতদের বিয়ে হয়ে যায়।
প্রতিবছর মায়ের পরনের শাড়ি থেকে শুরু করে তার কাছে দানে যে শাড়ি পরে তা বছরের বিশেষ সময় দান করে দেওয়া হয়। যেহেতু মানুষের মনে একটি বিশ্বাস রয়েছে যে অবিবাহিত মেয়েরা এই শাড়ি পেলে তাদের বিয়ে হয়ে যায় সেই কারণে গরিব বড়লোক নির্বিশেষে বুড়ি মায়ের শাড়ি নেওয়ার জন্য উদগ্রীব থাকেন। মায়ের পরনে যে বেনারসি থাকে সেগুলিকে মূলত কোনও গরীব মেয়েদের বিয়েতে দিয়ে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার সারারাত জুড়ে পরানো হয়েছে বেনারসি শাড়ি। প্রায় ২২৫টি বেনারসি শাড়ি ও শতাধিক তাঁত ও ছাপা শাড়িতে সেজে উঠছেন বুড়িমা। পুজোর সঙ্গে শাড়ির অত্যন্ত ভাবে একটা ওতপ্রোত যোগ রয়েছে। কারণ দশমীর দিনে দেবীকে বরণ করতে যারা আসেন তারা মহিলা নন, পুরুষ। তবে সমস্ত পুরুষই একেবারে মহিলাদের মতো শাড়ি পড়ে মাথায় ঘোমটা দিয়ে তবেই বরণ করেন তেঁতুলতলা বারোয়ারির বুড়িমা।
রাহী হালদার