স্থানীয়দের অভিযোগ বারবার সেচ দফতরকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হচ্ছে না। এরপরেই কুণাল ঘোষ যোগাযোগ করেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে। পার্থবাবু জানিয়েছেন আগামী বুধবার দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে তিনি ওই এলাকা পরিদর্শনে যাবেন। কোথায় কোথায় সমস্যা তিনি নিজে দেখবেন।
advertisement
দিঘায় এখন দেড় হাজার ট্রলার ছাড়াও আড়াইশোরও বেশি ভুটভুটিতে মৎস্যজীবীরা সমুদ্র থেকে মাছ শিকার করেন। পেটুয়া, জুনপুট, শৌলা, শঙ্করপুর, জলধা, নিউ জলধার এমনকী ওড়িশা উপকূলের প্রায় ৬৫ শতাংশ সামুদ্রিক মাছ দিঘা মোহনার বাজারে বিক্রির জন্য আসে। দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, “বছরের ন’মাস প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে চারশো থেকে পাঁচশো মেট্রিক টন সামুদ্রিক মাছ মোহনায় বিক্রি হয়। যার বাজার মূল্য আড়াই থেকে তিন কোটিরও বেশি। বিক্রি হওয়া মাছের আবার ৮০ শতাংশ বিদেশে রফতানি হয়।”
আরও পড়ুন: 'একদল চেষ্টা করেছিল...', প্রাথমিকের টেট শেষে বিস্ফোরক ব্রাত্য বসু! দিলেন বড় বার্তা
এমন বিপুল কর্মযজ্ঞে প্রায় তিরিশ হাজার মৎস্য ব্যবসায়ী প্রত্যক্ষ ভাবে এবং মাছ প্রক্রিয়াকরণ, মাছ শুকনো করা, জাল তৈরি-সহ নানা কাজে কয়েক লক্ষ মানুষ পরোক্ষভাবে যুক্ত। এ ছাড়াও রয়েছে নৌকা তৈরি ও মেরামত, মাছের ঝুড়ি, চট, দড়ি, প্লাস্টিকের প্যাকিং তৈরি থেকে বরফকল, রিকশা, ভ্যান-সহ পরিবহণের কাজে যুক্ত লোকেরা। দিঘা মোহনায় এই কমর্কাণ্ডকে কেন্দ্র করে নানা দোকানপাট, হোটেল-রেস্তোরাঁ, বাজার গড়ে উঠেছে। আর এই কাজ যেখানে থেকে করেন সেটি মোহনা সংলগ্ন চম্পা নদীর ধারে। একধারে ভাঙ্গন অন্যদিকে, সমুদ্রের চড়া পড়তে শুরু করা মৎস্যজীবীদের বর্তমান সঙ্কটগুলির অন্যতম প্রধান।
২০০৪ সালে মৎস্য দফতরের পক্ষ থেকে খাঁড়িতে ড্রেজিং ও কেন্দ্রীয় সরকারের জলসম্পদ ও শক্তি দফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন পুণের ওয়াটার পাওয়ার রিসার্চ সেন্টারের ব্যবস্থায় ‘গ্রোয়েন’ পদ্ধতিতে সমুদ্রের তলদেশ পর্যন্ত ৫০০ মিটার চওড়া কংক্রিটের পাঁচিল তৈরি করা হয়। তাতে সমুদ্র ভাঙন কিছুটা ঠেকানো গেলেও দিঘা সৈকতের পশ্চিমে ওড়িশার তালসারির কাছে বঙ্গোপসাগরে সূবর্ণরেখা নদীর মোহনায় বালুচর তৈরি হয়ে তা ক্রমশ বেড়ে নিউ দিঘার দিকে এগিয়ে আসছে। জোয়ারের জলের স্রোত পশ্চিম দিক থেকে পূবের দিকে সরছে। তার জেরে দিঘা মোহনা ও শঙ্করপুর খালে বালি জমে নাব্যতা কমে চড়া পড়েছে।
আরও পড়ুন: বিয়ের মরশুমে পর পর নেমন্তন্ন? ব্যাগে এই জরুরি জিনিসগুলো রাখছেন তো? মিস করলেই মুশকিল!
২০১২ সালে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে চড়া সংস্কার করে নাব্যতা বাড়াতে উদ্যোগী হয় মৎস্য দফতর। মোহনার মৎস্যজীবীদের অবশ্য অভিযোগ, সমুদ্র বন্দরের নাব্যতা বাড়ানোর জন্য যে ধরনের উন্নতমানের ড্রেজার ব্যবহার করা হয়, তা না করে জেসিপি মেসিন দিয়ে খাঁড়ির মাটি তোলা হয়। ফলে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।এদিন গ্রামবাসীদের দুর্দশার কথা শোনেন কুণাল। তিনি জানিয়েছেন, "এই জেলা থেকে সেচমন্ত্রী ছিলেন। যদিও তিনি স্থানীয়দের জন্য কোনও কাজ করেননি। এঁদের চাহিদা পূরণে সমস্ত ব্যবস্থা করা হবে। মন্ত্রী নিজে আসছেন। বাসিন্দারা তাদের সমস্যার কথা জানাবেন।"