বাঙালির শারদোৎসব বর্তমানে বিশ্ব ঐতিহ্য শিরোপায় গৌরবান্বিত। বিভিন্ন পুজো কমিটির দুর্গাপুজোর আয়োজনে নানা ভাবনা বিবিধ কর্মসূচি এবং শিল্পকলার উৎকর্ষতার জোয়ার বয়ে যায়। কোলাঘাটে বিরামহীন বয়ে চলা রূপনারায়ণ নদীর পাড়ে নতুন বাজার সংকেত ছাত্র সঙ্ঘের শারদোৎসব এই বছর ৫৩ বছরে পদার্পণ করল। এমনিতেই সারাবছর বহুমুখী জনকল্যাণ মূলক এবং সমাজ সচেতনতার কাজে এই ক্লাবের নাম জেলা ছাড়িয়ে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। দেবীপক্ষের সূচনাতেই এই পুজোর অভিনব উদ্বোধন হয়েছে। কিন্নর সমাজের প্রতিনিধিরা করলেন দুর্গা প্রতিমার আবরণ উন্মোচন। মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর প্রজ্বলন করলেন মঙ্গলদ্বীপ।
advertisement
এই বছর এই পুজোর সূচনা করলেন কিন্নর সমাজের প্রায় ১৫ জন প্রতিনিধি এবং এলাকার সরকারি মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীবৃন্দ। উদ্বোধকদের ফুল, চন্দন, উত্তরীয়, নববস্ত্রে, স্মারক ও মিষ্টান্নের শারদ সম্মানে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। এই পুজো কমিটির সম্পাদক সম্রাট ভৌমিক জানিয়েছেন, “কেবলমাত্র জন্মগত কারণে ভিন্ন লিঙ্গ ও শারীরিক গঠনের জন্য এক শ্রেণির মানুষ আজও সামাজিকভাবে বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। নিত্যজীবনে বিভিন্নভাবে তাঁরা লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, অবহেলিত। আমরা এই উদ্যোগের মাধ্যমে এই বার্তাই দিতে চাই যে, ওনারা এই সমাজের এবং আমাদেরই কাছের মানুষ। এছাড়াও যে সমস্ত সরকারি মহিলা স্বাস্থ্যকর্মী মানুষের সেবায় দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে দিবারাত্র এবং সাধ্যাতীতভাবে কাজ করে চলেছেন, আমরা তাদের পাশে থাকার বার্তা দিতে চেয়েছি।”
মণ্ডপ সজ্জায় তুলে ধরা হয়েছে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, বিবাহ অনুষ্ঠানে পণ প্রথার বিরুদ্ধে, ডেঙ্গি প্রতিরোধ, প্লাস্টিক দূষণ রোধে, পথ নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন মডেল-সহ চিত্র প্রদর্শনী। এবারের অন্যতম আকর্ষণ চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী ঘরানার প্রায় বিশ ফুট উচ্চতার স্বর্ণালী গহনার সাজে সজ্জিতা দুর্গা মূর্তি উদ্বোধনের মাধ্যমে কোলাঘাটে পুজো উৎসবের আমেজ ও মেজাজ ছড়িয়ে পড়ল বলা যায়। আমরা সবাই যখন আনন্দে মেতে উঠি, তখন কিন্নর মহিলারা পুজোর আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়। তাঁদের পুজোর উৎসবে সবার সঙ্গে সামিল করতেই এই উদ্যোগ নেয় পুজো উদ্যোক্তারা।






