জঙ্গলের মাঝে বসবাস করাও ভয়ের ব্যাপার ছিল মাঝে মাঝেই ডাকাত পড়ত গ্রামে। মাটির বাড়িতে সুযোগ পেলেই চোরেরা কাটত সিঁধ কেটে লুঠ পাট চালাত, বাড়ির সমস্ত জিনিসপত্র যেত তাদের খপ্পরে। তা বন্ধ করতে হিমসিম খেত হত গ্রামের মানুষকে। সেখান থেকেই আসে বাড়ির দেওয়ালে পাথরের ব্যবহার।
advertisement
জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা বনের কাঠ,পাতা সহ নানান বনজ সম্পদ সংগ্রহ করে দিন যাপন করত। আর তা চুরি হয়ে গেলে তাদের খুব কষ্ট হত। সেখান থেকে বাঁচতে নতুন পথ খোঁজেন তারা। বানান হয় পাথরের ঘর। মাটির পরিবর্তে পাথরের ব্যবহারের ফলে চোরেরা সহজে সিঁধ বা দেওয়াল কাটতে পারত না।
পাথরে আঘাত করলে আওয়াজ হয় ফলে গ্ৰামবাসীদের হাতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা থাকে। আর পাথরের বাড়ি সাধারণত কাঠের বা অন্যান্য হালকা উপাদানের তৈরি বাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ হয়, কারণ পাথর শক্ত এবং সহজে ভাঙ্গা বা ভেদ করা যায় না।
বাড়িটি তৈরির সময় দেওয়া হয় পাথরের মাঝে মাঝে মাটি। ব্যবহার করা হয় না সিমেন্ট। তাতেই হয় শক্ত পোক্ত। এখানকার মানুষ জঙ্গল থেকে পাথর সংগ্রহ করে নিয়ে আনেন। এতে খরচও বাঁচবে, ঘর হবে এসির মত ঠাণ্ডা।
মাটির বাড়ি এমনিতেই ঠান্ডা। পাথর তার থেকেও বেশি ঠাণ্ডা। ফলে গ্রীষ্মের সময় এই বাড়িতে থাকলে আপনি অনুভব করতে পারবেন এসির মত ঠাণ্ডা। মাটির বাড়িতে যেমন বর্ষার সময় স্যাঁতস্যাঁতে ও গুমোট ভাব থাকে। কিন্তু পাথরের বাড়িতে তা হয় না। ফলে বাড়িটি বসবাস করাও বেশ আরামদায়ক।
প্রত্যন্ত জঙ্গলমহলের বেলপাহাড়ি ব্লকের ডডরা গ্রামে রয়েছে বেশ কয়েকটি পাথরের বাড়ি। কেবল পাথরের বাড়ি তৈরি করলেই যে চুরি বন্ধ হয়ে যাবে, এমন নয়। চুরি বন্ধ করতে একটি পদক্ষেপ হতে পারে। তবে জঙ্গল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা সহজ ও অল্প খরচে বানিয়ে নিতে পারেন এই ধরনের বাড়ি। বর্তমান সময়ে বাড়ির দেওয়া কেটে চুরির ঘটনা আর নেই বললেই চলে।
তন্ময় নন্দী