প্রথমে স্থানীয়রাই শব্দের উৎস খুঁজে পান। কিছুক্ষণের মধ্যেই স্থানীয় বাসিন্দা শ্রীমন্ত প্রামানিক সেখানে পৌঁছে দেখেন, পুকুরপাড়ে ভিড় জমেছে। তিনি পরিস্থিতি বুঝে দ্রুত কালনা মহকুমা হাসপাতালের কয়েকজন কর্মী এবং এলাকার এক সিভিক ভলেন্টিয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপর দেরি না করে, সোমবার গভীর রাতেই তারা শিশুটিকে উদ্ধার করে কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
advertisement
হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতম বিশ্বাস জানান, প্রাথমিকভাবে রিপোর্ট অনুযায়ী শিশুটি একদিনের বেশি নয়। তাকে SNCU বিভাগে ভর্তি রাখা হয়েছে। সমস্ত চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং এখন সে বিপদমুক্ত। হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেন, সময়মতো শিশুটিকে হাসপাতালে আনা না হলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত। উদ্ধারকারী শ্রীমন্ত প্রামানিক জানালেন, “কে বা কারা এই অসহায় শিশুটিকে ফেলে দিয়ে গেছে, আমরা জানি না। যখন উদ্ধার করি, তখন সে খুবই দুর্বল ও অসুস্থ অবস্থায় ছিল। আমাদের চেষ্টায় তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। আমি চাই, সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া মেনে এই শিশুটি আমার দিদির কাছে দত্তক যাক।”
শ্রীমন্ত প্রামানিকের দিদিও আবেগঘন কণ্ঠে জানান, “আমার দুই মেয়ে আছে, কিন্তু ছেলে নেই। তাই আইন মেনে এই শিশুটিকে নিজের সন্তান হিসেবে লালন করতে চাই।” কালনা থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিশুর পরিবার বা অভিভাবকের সন্ধানে ইতিমধ্যেই সব জায়গায় বার্তা পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিকেও (CWC) বিষয়টি জানান হয়েছে, যাতে আইনি প্রক্রিয়া অনুসারে শিশুটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা যায়। এই ঘটনা এলাকায় গভীর আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। একদিকে অন্ধকার রাতের নির্মম পরিত্যাগ, অন্যদিকে মানবিকতার উজ্জ্বল উদাহরণ,যেখানে অপরিচিত হয়েও মানুষ একজন শিশুর পাশে দাঁড়িয়েছে। হয়তো এই অজানা শিশুটির জন্য এটাই তার নতুন জীবনের প্রথম আশ্রয় এবং প্রথম ভালোবাসা।