আরও পড়ুনঃ ৫০০ বছরের প্রাচীন নবদ্বীপের মা আগমেশ্বরী, মূর্তি তৈরি থেকে বিসর্জন হয় কালী পুজোর রাতেই
জানা যায়, বেলডাঙার জাতীয় সড়ক সংলগ্ন বেসরকারি গাড়ি স্ট্যান্ডের উল্টো দিকে নির্মীয়মাণ জাতীয় সড়ক রয়েছে। বর্তমানে চলছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের কাজ। অসমাপ্ত হয়ে পড়ে থাকা জাতীয় সড়কের একটি লেন এবং তার সংলগ্ন বিশাল এলাকা জুড়েই প্রায় তিন মণ ধান ফলিয়েছেন ওই ভবঘুরে ‘পাগলি’। বর্তমানে অর্ধেক ধান পেকেও গিয়েছে। কয়েক দিন আগে একটু বৃষ্টিতেই ওই এলাকায় জল জমে যায়। ফলে চলাচলের অসুবিধা হয়। চলতি বর্ষাতেও জল জমেছিল। সেই জল একটু সরে যেতেই হঠাৎই সেখানে নিজের ঠিকানা গড়ে তোলেন মহিলা বলেই জানা যায়। সেখানেই তিনি একটু একটু করে ফলিয়েছেন ধান।
advertisement
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, উদ্বৃত্ত ধানের চারা জড়ো করে চারদিকে রোপণ করে দিয়েছিলেন ভবঘুরে পাগলি। জাতীয় সড়কের পাশেই পড়ে থাকা গোবরকে সার হিসাবে ব্যবহার করেছেন তিনি। প্রথম প্রথম তাঁর কাণ্ড দেখে পথচলতি মানুষ মজা করতেন। তবে এই কাজে তাকে কেউই বাধা দেননি তাঁকে। আর মহিলাও আপন খেয়ালে ধানের চারা পুঁতে গিয়েছেন। বিশাল রাস্তার মাঝখানে আচমকা বিশাল জায়গা জুড়ে ধানগাছ দেখে হতবাক হয়েছেন স্থানীয়রা ও পথ চলতি মানুষজন। আর ঠান্ডা পড়লেও সেই ধানের ক্ষেতের পাশে বসেই ধান ক্ষেত আগলে রাখছেন পাগলি। সকাল থেকে সন্ধ্যা তার তৈরি ক্ষেত আগলেই সময় কেটে যায় তাঁর, যে যা খাবার দেয় তাই খেয়েই দিনগুজরান করেন। কোনদিনও খাবার না পেলেও অনায়াসে কাটিয়ে দেন। যদিও তার নাম বলতে পারেন না তিনি। আর ধানের কাছে কেউ গেলে তিনি তেড়ে আসেন।
এক বেসরকারি বাস চালকের কথায়, ওই ধানগাছগুলোতে কাউকে হাত দিতে দেন না তিনি। যদিও কার্তিক মাস শেষ হতে চলল, ঠান্ডার আমেজ পড়ছে। আর এখন ইতিমধ্যেই অর্ধেকের বেশি ধান পেকে গিয়েছে। সেগুলো ঝাড়াই-মাড়াই করে একাই বস্তাবন্দি করে ফেলেছেন ৫০-এর মহিলা। সেই বস্তায় কারও হাত দেওয়ার জো নেই। রে-রে করে তেড়ে যান প্রৌঢ়া। এখনও অর্ধেক ক্ষেতের ধান তোলার কাজ বাকি। সব মিলিয়ে প্রায় তিন মণের বেশি ধান ফলিয়েছেন তিনি। জাতীয় সড়কের জন্য পড়ে থাকা জমিতে এমন এক মহিলার ধান ফলানোর কাণ্ডে অবাক সকলেই।যদিও জেলা কৃষি দফতর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। যদি একজন ভবঘুরে তার আপন খেয়ালে এই কাজ করে থাকেন তাহলে তা গর্বের।
কৌশিক অধিকারী