#বর্ধমান: রথের চাকায় লকডাউন, তাই ভক্তদের কোলে চড়েই মাসির বাড়ি গেলেন বর্ধমান রাজবাড়ির জগন্নাথ। বর্ধমানের রাজ আমলের প্রতিষ্ঠিত রাধাবল্লভ মন্দিরে এ ভাবেই এ বারের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হল। বিশেষ পূজা পাঠের পর নিয়ম মেনে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রাকে রথে তোলা হলেও সেই রথের চাকা থামল মন্দির চত্বরেই। এরপর ভক্তদের কোলে চড়ে মাসির বাড়ি গেলেন জগন্নাথ।
advertisement
বর্ধমান রাজবাড়ির কাছেই সোনাপট্টিতে রয়েছে লক্ষী নারায়ণ জিউ মন্দির। পাশেই নতুন গঞ্জে রয়েছে রাধাবল্লব জিউ মন্দির। দু’টি মন্দির বর্ধমানের রাজারা তৈরি করেছিলেন। সময়ের ব্যবধানে সংস্কারের অভাবে দু’টি মন্দির জীর্ণ হয়ে পড়েছিল। বর্ধমানের ব্যবসায়ী পরিবারের সহায়তায় রাধাবল্লব মন্দির সংস্কারের পর আড়ম্বরের সঙ্গে সেখানে রথযাত্রা উৎসব শুরু হয়েছিল। শোভাযাত্রা করে নৃত্য গীতের মধ্য দিয়ে বাজনা বাজিয়ে রথে চড়ে নতুনগঞ্জ থেকে আলমগঞ্জ বারোয়ারি তলায় মাসির বাড়ি যেতেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা।
কিন্তু এ বার পরিস্থিতি আলাদা। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জনসমাগম বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন বর্ধমানের মহারাজ কুমার প্রণয় চাঁদ মহাতাব। তাঁর সেই নির্দেশ মেনে লকডাউন বজায় থাকল জগন্নাথের রথে। মন্দিরের পুরোহিত বিপ্রদাস বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা মহারাজ কুমার আগেই রথযাত্রা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশকে শিরোধার্য করে এ দিন রথ যাত্রার বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। পুজোর পর রীতি মেনে জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রাকে সুদৃশ্য রথের চাপানো হয়। নিয়ম মেনে গড়ানো হয় রথের চাকা। মন্দিরের এক দরজা থেকে অন্য দরজায় গিয়ে রথ থেমে যায়। এরপর জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা ভক্তদের কোলে চেপে আলমগঞ্জে মাসির বাড়ি গিয়েছেন। জগন্নাথের মূল মূর্তি মন্দিরে ফিরে এসেছে।
এ বারের রথযাত্রা আড়ম্বরহীন হওয়ায় মন মরা ভক্তদের অনেকেই। তবে তাঁরা বলছেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে অনেক কিছুই মেনে নিতে হচ্ছে। রথযাত্রার উৎসব তাই বন্ধ থাকল। সুস্থ থাকলে আগামী বছরগুলিতে ধুমধামের সঙ্গে রথযাত্রা পালন করা যাবে।