এ যেন সর্ষের মধ্যেই ভূত! বৈধ বালি খাদানেও চলছে অবৈধ কারবার ঝাড়গ্রাম জেলায় রয়েছে ২৫৭টি বালি খাদান। এর মধ্যে ১১২টি বৈধ। ১৫৭টি বালি খাদানের টেন্ডার এখনও হয়নি।
এই খাদানগুলি সরকার লিজ দিয়েছে। অভিযোগ, এই বৈধ খাদান থেকেই রমরমিয়ে চলছে অবৈধ বালি ব্যবসা। কীভাবে?
অভিযোগ, বালি খাদানের যে অংশ থেকে সরকার বালি তোলার অনুমতি দিয়েছে, সেখান থেকে না তুলে, পাশের নদী চর থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলা হয়। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, নদী থেকে ড্রেজিং করে বালি তোলা নিষিদ্ধ। কিন্তু, অভিযোগ বৈধ খাদানগুলি থেকেও এভাবেই বালি তোলা হয়। এর ফলে নদীর বুকে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়। যার জেরে স্নান করতে নেমে অনেক সময়ই তলিয়ে যান স্থানীয়রা।
advertisement
এছাড়াও উঠে আসছে আরও একটি প্রসঙ্গ ৷ একটি লরিতে ৩০০ কিউবিক ফুট বালি তোলার নিয়ম রয়েছে সরকারিভাবে। কিন্তু, তোলা হয় ৪০০ থেকে পাঁচশো কিউবিক ফুট বালি। এমনটাই অভিযোগ ৷ অনেক সময় এর থেকেও বেশি। কিন্তু, বালি খাদানের মালিক চালান দেন, ওই ৩০০সিএফটিরই। অর্থাৎ টাকা নিচ্ছেন পাঁচশো সিএফটির। কিন্তু, সরকারের ঘরে জমা পড়ছে ৩০০ সিএফটি বালির রাজস্ব।
বৈধ বালি খাদান থেকে সরকারের যে কী পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে, তা একটা তথ্য থেকেই স্পষ্ট। ২৬ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রামে সভা করে বালি খাদান নিয়ে কড়া বার্তা দেন। তার আগের দিন, অর্থাৎ এ বছর এপ্রিল থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত, প্রায় আট মাসে বালি খাদান থেকে সরকারের আয় হয়েছিল ১৬ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। আর মুখ্যমন্ত্রী ধমকের পর ৭ দিনে রাজস্ব আদায় হয় ৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা।
এর পাশাপাশি রয়েছে ওভারলোডিং। অভিযোগ, সরকারের বেঁধে দেওয়া ৩০০ সিএফটির থেকে অনেক বেশি বালি বোঝাই করা হয় ট্রাকে। এই ওভারলোডেড ট্রাকের জেরে গ্রামের রাস্তার যেমন ক্ষতি হয়, তেমনই অনেক সময় রাস্তায় বালি পড়ে দুর্ঘটনাও ঘটে।
একদিকে বৈধ খাদান থেকে অবৈধ কারবার। এর পাশাপাশি বোইনি খাদান তো রয়েইছে। ঝাড়গ্রামে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দেওয়া সত্ত্বেও, এখনও সেই ঝাড়গ্রামের একাধিক বোইনি খাদান থেকে অবাধে বালি লুঠ চলছে।