তাদের আতঙ্ক, হাতে মাত্র আর এক দিন, সময়ের মধ্যে প্রতিমা তৈরি করে মণ্ডপে পৌঁছে দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে মৃৎশিল্পীদের। প্রতিবছর লক্ষ্মী পুজোর সময় এগরার প্রতিমা শিল্পীরা ভাল ব্যবসা করেন। দুর্গাপুজো শেষ হতেই তাঁরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন লক্ষ্মীদেবীর প্রতিমা তৈরির কাজে। বিভিন্ন এলাকা থেকে অর্ডার আসে। কিন্তু এবছর টানা বর্ষণে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।
advertisement
বৃষ্টি ও মেঘলা আবহাওয়ার কারণে প্রতিমা শুকোতে সময় লাগছে অনেক বেশি। সাধারণত টানা রোদ থাকলে প্রতিমার ভেজা মাটি সহজেই শুকিয়ে যায় এবং তার পর রঙের প্রলেপ দেওয়া যায়। কিন্তু এখন প্রতিমাগুলো দীর্ঘক্ষণ ভিজে থাকছে। এতে সময় নষ্ট হচ্ছে, আবার প্রতিমার গুণগত মান নিয়েও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এগরার প্রতিমাশিল্পী বিশ্বজিৎ পাত্র জানান, ‘নিম্নচাপের কারণে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে প্রতিমা তৈরি করতে গিয়ে প্রবল সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আকাশে রোদ নেই, তাই প্রতিমা শুকোতে সময় লাগছে। সেই কারণে রঙের কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। হাতে একদিন সময়, কিন্তু কীভাবে সব শেষ করব তা ভেবে পাচ্ছি না’।
বিগত কয়েকদিন ধরে প্রতিমা শিল্পীরা মাথায় ত্রিপল চাপিয়ে কোনওরকমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কেউ প্রতিমা ঢেকে রেখেছেন, কেউ আবার শুকনো হাওয়া লাগানোর চেষ্টা করছেন। তবুও কাঙ্ক্ষিত ফল মিলছে না। অনেক প্রতিমার এখনও অর্ধেক কাজ বাকি। শুকনো মাটি ছাড়া রঙ করা যাবে না, অথচ সোমবারের মধ্যে প্রতিমা পৌঁছতেই হবে মণ্ডপে। ফলে একদিকে সময়ের চাপ, অন্যদিকে আবহাওয়ার ভ্রুকুটি, সব মিলিয়ে তাঁদের অবস্থা কার্যত নাজেহাল।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
লক্ষ্মী পুজোর আগে প্রতিমা বিক্রি থেকে শিল্পীদের ভাল আয় হয়। দুর্গাপুজো শেষে সেই টাকাই তাঁদের সংসারের রোজগারের ভরসা। তাই এবছর টানা বৃষ্টির কারণে প্রতিমার কাজ সময়মত শেষ করতে না পারলে বড় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। অনেক অর্ডার বাতিল হয়ে যেতে পারে বলেও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন শিল্পীরা।
সব মিলিয়ে লক্ষ্মী পুজোর আগে শিল্পীদের ঘরে দুশ্চিন্তার মেঘ ঘনীভূত। একদিকে প্রতিমা সময়মতো তৈরি না হওয়ার ভয়, অন্যদিকে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা। সব মিলিয়ে এবছরের লক্ষ্মী পুজো শিল্পীদের কাছে যেন এক কঠিন পরীক্ষার মঞ্চ হয়ে উঠেছে।