হুগলির শেওড়াফুলির জগবন্ধু মুখার্জী লেনের বাসিন্দা সুশান্ত সাঁতরার পুত্র(২১) ২০২০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। ২০২২ সালে বিহারের মুজাফফরপুর রাজেন্দ্র প্রসাদ এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয় সে। সেখানে কলেজেরই হস্টেলে থাকতেন সুরম্য। ২৮ জুলাই ভোর রাতে কলেজ হস্টেল থেকে ছাত্রের বাড়িতে ফোন করে বলা হয়, রাত তিনটে নাগাদ হস্টেলের তিন তলার ছাদ থেকে পড়ে গেছে ছেলেটি। তাকে প্রশান্ত মেমোরিয়াল চ্যারিটেবল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
advertisement
ওইদিনই পূর্বা এক্সপ্রেস ধরে বিকালের মধ্যে ছাত্রের বাবা কাকা বিহারে পৌঁছে যান। কিন্তু মুজাফফরপুর হাসপাতালে পৌঁছানোর আগে পটনা কলকাতা রাজ্য সড়কের বক্তিয়ারপুর এলাকায় রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সে ছাত্রের নিথর দেহ বাড়ির লোকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: বীরভূমে কি তবে শেষের পথে অনুব্রত-রাজ? বাজিমাত কাজল শেখের! তুঙ্গে জল্পনা
ছাত্রের আত্মীয় তিলকচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ”হাসপাতাল থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয় ময়না তদন্ত করে। এটাতেই আমাদের সন্দেহ এর মধ্যে রহস্য কিছু আছে। কিছু চাপা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লোডশেডিং ছিল তাই পাঁচ ছয় জন ছাত্র হস্টেলের ছাদে গিয়েছিল। সেখান থেকেই কোনও ভাবে সুরম্য পড়ে যায়। কিন্তু আমাদের মনে হচ্ছে এটা নিছক দুর্ঘটনা নয়। তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত হোক। ছাত্রের বাবা সুশান্ত সাঁতরা বলেন, ”ঘটনাস্থলে কয়েকজন সিনিয়র ছাত্র ছিল। তারা বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছিল এটা নিছক দুর্ঘটনা। কলেজ খুব দ্রুত সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছে। একটা সাদা কাগজে ছেলের নাম লিখে দিয়ে দেয়। মৃতেদহ শেওড়াফুলিতে নিয়ে এসে দাহ করা হয়।”
আরও পড়ুন: ‘চুক্তি করে তৃণমূলে অর্জুন সিং, টিকিট পাবেন তো?’ বিস্ফোরক শুভেন্দু! পাল্টা লোডশেডিং কটাক্ষ
ছাত্রের মা মনীশা সাঁতরা বিহারের ডিজিপি, মুজাফফরপুর আইজি, মুজাফফরপুর এসপি ও সাকরা থানার আইসি-র কাছে অভিযোগ জানান।তার ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। সুরম্যর একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল যার বাড়ি দূর্গাপুরে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে অনেক কিছু জানা যাবে। কিন্তু বিহার পুলিশ কিছুই করেনি।”
মনীশা সাঁতরা বলেন, ”যাদবপুরে ছাত্রের মৃত্যুর পর দেখছি পুলিশ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপাল মিডিয়া সবাই সক্রিয় ভাবে বিচার চাইছেন। কিন্তু আমার ছেলের ক্ষেত্রে এসব কিছুই হল না। কিন্তু ভাল ছাত্ররা তো ভিন রাজ্যে পড়তে যাবেই। সেখানে যদি এই ধরনের ঘটনা হয়, কী হবে। আমার ছেলে আর ফিরবে না আর যেন তাঁর মতো কেউ এভাবে চলে না যায়, সেটা দেখা উচিত।”
—- রাহী হালদার