২৫ বছর পর নিজের ঘরে ফিরেছে সমর ঘোষ। ছোটবেলায় যখন সে গিয়েছিল তখন তার বয়স ছিল ১১ আর যখন ফিরেছে তখন তার বয়স প্রায় ৩৬! স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১১ বছর বয়সে সমর ঘোষ ও আরও এক নাবালককে কাজের টোপ দিয়ে বাড়ি থেকে জয়পুর নিয়ে যায় বলরামবাটি এলাকার এক স্বর্ণকার। প্রথম দু’বছর যোগাযোগ ছিল পরিবারের সঙ্গে। পরে হঠাৎই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অথচ মধ্যস্থকারী স্বর্ণকার জানিয়েছিলেন সে ভিন রাজ্যে ভাল আছে, কাজ করছে।
advertisement
কিন্তু তারপর থেকে আর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ হয় নি সমর ঘোষের। এতদিন খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পায়নি বাড়ির লোকজন। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় ছেড়ে দিয়েছিল পরিবার। হঠাৎ করে বাড়ি ফিরল সেই ছেলে। ঘটনার আকস্মিকতায় হতবাক হলেও খুশির হাওয়া এলাকায়।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
ফিরে আসা হুগলির যুবক সমর ঘোষ জানান, জয়পুরে যেখানে কাজ করছিল সেখানে তাকে প্রচন্ড মারধোর করা হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে এদিক-ওদিক ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে এক রেস্টুরেন্টে কাজে লাগে সমর। দিনরাত রেস্টুরেন্টে পরিশ্রম করলেও খাবার ছাড়া জুটত না কোন কিছুই। টাকা-পয়সাও দেয়নি দোকানের মালিক। পাশাপাশি চলত নানারকম মানসিক অত্যাচার।
অবশেষে অন্য জায়গা থেকে এক হাজার টাকা জোগাড় করে জয়পুর থেকে হাওড়া টিকিট কেটে উঠে পড়ে ট্রেনে। হাওড়া স্টেশনে নেমে লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে চলে আসেন বলরামবাটি। হাঁটতে হাঁটতে উপস্থিত হয়ে বাড়ির সামনে। কথাবার্তার মাধ্যমে বেরিয়ে আসে যুবকের পরিচয়। যদিও বাংলা ভাষা সম্পূর্ণরূপে ভুলে গেছে সমর। হিন্দিই এখন তার কাছে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। তবে আর ভিন রাজ্যে ফিরে যেতে চায় না সে। এখানেই কোন একটা কাজ জোগাড় করে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতে চায় সমর।
রাহী হালদার