চুঁচুড়া জোড়াঘাটে গঙ্গাপারের একটি আবাসনের বাসিন্দা ঋতব্রত সেনগুপ্ত ও তাঁর স্ত্রী রূপা সেনগুপ্ত। এক বছর আগে তাঁরা রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পেয়েছিলেন ছোট্ট একটি বিড়ালছানাকে। খুব আদরের সঙ্গে তার নাম রেখেছিলেন টমু। একেবারে নিজের সন্তানের মতন করে ভালবাসতেন তাঁরা তাঁদের এই বিড়ালকে। তার খাওয়া দাওয়ায় সমস্যা ছিল বলে বাড়িতে সব সময় মজুত করা থাকত ক্যাট ফুড। গরম পছন্দ করে না, তাই এসি-তে ঘুমোতে পছন্দ করত। তার শোওয়ার আলাদা বিছানা। ওজন ছিল এগারো কেজি। তার জন্য বাড়িতে রাখা হয়েছে বালির ট্রে। তবে প্রচন্ড ভীতু স্বভাবের। তাই বাড়ির বাইরে একা একা কখনওই সে বের হত না। অথচ আচমকাই সেই টমু নিখোঁজ হয়ে যায়। গত ১৬ জানুয়ারি বিকেল থেকে আর তার কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক খোঁজ করেছেন সেনগুপ্ত দম্পতি। কোথাও টমুর কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। তাই এবার পোষ্যর সন্ধান পেতে শহর জুড়ে পড়ল নিখোঁজ পোস্টার। তাতে টমুর ছবি দিয়ে সন্ধানের কাতর আবেদন। সঙ্গে সমাজ মাধ্যমেও ছবি সমেত কাতর আবেদন করেছেন দম্পতি।
advertisement
এই বিষয়ে বাড়ির গিন্নি রূপা সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, ‘‘খুবই বাধ্য ছিল টমু। কয়েকদিন আগে টমুর শরীর খারাপ হয়েছিল। ডাক্তার দেখানো হয়েছে। ওর ইসিজি, রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। সব নিয়ে চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তাছাড়া ওকে নিয়মিত ডাক্তার দেখানো হতো। এখন সে সম্পূর্ণ সুস্থ ছিল। তবে যে কোনও খাবার খেত না। প্যাকেটের খাবার ওর খুব পছন্দের। ১২ দিন হয়ে গেছে। কী খাচ্ছে? কীভাবে আছে ভাবতেই পারছেন না।’’
ঋতব্রত জানিয়েছেন, তাঁদের একটি মাত্র ছেলে। সেই ছেলের জন্য তিনি কখনও ছুটি নেননি। অথচ টমু হারিয়ে যাওয়ায় তাঁর পাগলপ্রায় অবস্থা। বাড়িতে খাওয়া দাওয়া প্রায় বন্ধ। অফিস ছুটি নিয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তাঁদের আরও একটি বিড়াল আছে তার নাম মাম্মা। সে কয়েকদিন পর শাবক প্রসব করবে। সে জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা আছে। কিন্তু এমন সময় টমুর নিখোঁজ হওয়ায় তাঁর ঘুম উড়ে গিয়েছে। ঋতব্রতবাবু আশাবাদী তাঁরা যেমন ওকে খুঁজছেন, টমুও হয়ত ঠিক তেমনই তার বাড়ি খুঁজে বেড়াচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে তিনি খোঁজ চালাচ্ছেন। সঙ্গে শহরে পোস্টার ঝুলিয়ে দেখছেন, যদি কেউ খোঁজ দেন।