‘দেউল’ শব্দের অর্থ ‘দেবালয়’। দেউলগুলি প্রায় হাজার বছরেরও বেশি পুরনো কিন্তু কালের প্রকোপে অধিকাংশই বর্তমানে ধ্বংসপ্রায়। বর্ধমান শহরের অদূরে মেমারির আঝাপুরে এমনই একটি দেউল রয়েছে। বার্ধক্যের ছাপ পড়লেও এখনও মাথা তুলে অতীতের স্মৃতিচারণ করে চলেছে এই দেউলটি।
আরও পড়ুনঃ ছাতা মাথায় রান্না, ঘরে ঢুকে যায় সাপ! কালনার এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অবস্থা দেখলে আঁতকে উঠবেন
advertisement
জানা যায়, একসময় এখানে সাতটি দেউল ছিল। কিন্তু বর্তমানে একটিই টিকে রয়েছে। এই মন্দির কে নির্মাণ করেছিলেন তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। ইতিহাসবিদ সর্বজিৎ যশ জানান, লোকগল্পে পাওয়া যায় জায়গাটি স্থানীয় মোহনগড় বলা হত। রাজা মোহন নামে কোনও এক রাজা ওই এলাকায় রাজত্ব করতেন। এই এলাকাটি তাঁর গড় ছিল অর্থাৎ দুর্গ বা বসতি ছিল।তিনি নাকি এই মন্দিরগুলি তৈরি করেছিলেন। কিন্তু এগুলি লোককথা, কোনও লিখিত ইতিহাসতত্ত্বে এইগুলি আমরা পাইনি। তবে এখান থেকে বেশ কিছু জৈন মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও জৈন আমলের একাধিক জিনিসও মিলেছে। এমনকি বেশকিছু মূর্তি মাটির তলায় পড়ে আছে বলেও মত স্থানীয় মানুষের।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
আঝাপুরের সাত দেউলের মতো এই ধরণের স্থাপত্য বাংলার ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় তুলে ধরে। পাল আমলের বৌদ্ধ ও সেন আমলের হিন্দু প্রভাবের আগে এই অঞ্চলে জৈন ধর্মের এক সমৃদ্ধ ইতিহাস ছিল, এই দেউলটি তার নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে এটি একটি গবেষণার বিষয়। কারণ এর নির্মাণকাল এবং নির্মাতা সম্পর্কে এখনও অনেক কিছু অজানা। স্থানীয় লোককথা এবং ঐতিহাসিক তথ্যের মধ্যেকার এই ফারাকই মন্দিরটিকে আরও রহস্যময় এবং আকর্ষণীয় করে তুলেছে।