তৎকালীন ব্রিটিশ যুগে শুধুমাত্র অত্যাচার কিংবা বিপ্লব সংঘটিত হয়নি, মেদিনীপুরে হয়েছে উন্নয়ন। সাধারণ মানুষের কথা ভেবে মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিতে রাজাদের উদ্যোগে এবং আর্থিক সহযোগিতায় গড়ে ওঠে একাধিক জিনিস। যা শহর মেদিনীপুরের ল্যান্ডমার্ক হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।
advertisement
মেদিনীপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় তৈরি করা হয় সুবিশাল জলের ট্যাঙ্ক। যা বেশ অনেক বছর মেদিনীপুরের আনাচে-কানাচে জল সরবরাহ করেছে। তবে সেই ঐতিহ্য ও স্থাপত্যকে বাঁচিয়ে রেখেছে মেদিনীপুর। শতবর্ষ প্রাচীন এই জলের ট্যাঙ্ক শুধুমাত্র একটি উন্নয়ন নয়, ক্রমবর্ধমান ইতিহাসের ধারার ধারক ও বাহক। যা জেলার নাম উজ্জ্বল করেছে।
দেখে মনে হবে স্বাভাবিক একটি জলের ট্যাঙ্ক। বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে এমন ট্যাঙ্ক। তবে বিপ্লবের জেলা মেদিনীপুরের এই ট্যাঙ্ক শুধু জলের গ্যালন নয়, বরং ইতিহাসের আকর, পরম্পরার বাহক। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সদর শহর মেদিনীপুরে মেদিনীপুর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে শতবর্ষ প্রাচীন পুরনো জলের ট্যাঙ্ক।
চারিদিকে ইটের দেওয়াল দিয়ে ঘেরা বেশ কয়েক হাজার গ্যালন ক্ষমতা সম্পন্ন এই পুরোনো জল ট্যাঙ্ক। ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় আজ থেকে প্রায় একশো বছর আগে ১৯২৪ সালে মেদিনীপুর শহরে উচ্চতম স্থান স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় জলাধার নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সুউচ্চ এবং বেশ কয়েক হাজার লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন এই জলের ট্যাঙ্ক। যা বেশ কয়েক বছর ধরে গোটা মেদিনীপুর পৌর এলাকা জুড়ে পানীয় জল সরবরাহ করেছে।
মেদিনীপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ৬০ বছর পরে জনস্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে এই ট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়। জানা যায়, এই জলাধার নির্মাণের জন্য ময়ূরভঞ্জের রাজা, বর্ধমানের রাজা, মহিষাদলের রাজা-সহ ২৮ জন এই ট্যাঙ্ক নির্মাণে অর্থ সাহায্য করেন। এছাড়াও একাধিক সামাজিক এবং মানুষের উপকারে কাজ করেছেন রাজা নরেন্দ্রলাল খান। মনে করা হয়, একাধিক কল স্থাপনের জন্য অর্থ সাহায্য করায় এই ট্যাঙ্কের নাম হয় রাজা নরেন্দ্রলাল খানের নামে। প্রসঙ্গত পাথুরে এলাকা জঙ্গলমহলের পশ্চিম মেদিনীপুর। স্বাভাবিকভাবে পৌর এলাকায় মানুষের বাড়ি বাড়ি জল পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই জলাধার নির্মাণ করা হয়। ইটের দেওয়াল দিয়ে ঘেরা, চারিদিকে ১২ টি আর্চের মত বিম দিয়ে তৈরি এই বিশাল জলাধার। শুধু মানুষের কাজেই যে ব্যবহৃত হয়েছে তা নয়, এই জলাধার বহন করে চলেছে সুদীর্ঘ ১০০ বছরের ইতিহাসকে। মেদিনীপুর জেলার ল্যান্ডমার্ক শহরের পুরোনো জল ট্যাঙ্কি।