ব্রিটিশ বিরোধী কার্যকলাপের জন্য তাঁর দ্বীপান্তর যাত্রা হয়। মনে করা হয়, তিনিই প্রথম বিপ্লবী যিনি ভারতবর্ষ থেকে বিদেশে গিয়েছিলেন সামরিক নানা কৌশল শেখার জন্য। ব্রিটিশ হঠাতে তিনি তৈরি করেছিলেন বোমা। তাঁকে অস্ত্রগুরু আখ্যায় ভূষিত করা হয়েছে পরবর্তীকালে। তবে বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি হেমচন্দ্র কানুনগো ছিলেন একজন প্রতিভাবান শিল্পী। যার হাতের ছোঁয়ায় প্রাণবন্ত হয়েছে একাধিক ছবি।
advertisement
আরও পড়ুন: ফের ট্রেন দুর্ঘটনা! বিষ্ণুপুরে লাইনচ্যুত একাধিক কামরা, আতঙ্কিত যাত্রীরা, প্রবল ভোগান্তি
সাদা ক্যানভাসে রং তুলি দিয়ে ফুটে উঠেছে বিভিন্ন পোর্ট্রেট, যা এখনও সংরক্ষিত। বেশ কয়েক বছর আগের তার আঁকা ছবি বর্তমান শিল্পীদের কাছে অত্যন্ত আবেগের। বিপ্লবী হেমচন্দ্র কানুনগো জন্মেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নারায়ণগড়ে। ছোট জীবন থেকে অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন হেমচন্দ্র।কিন্তু শৈশব থেকেই ছবি আঁকার অভ্যাস ছিল। পড়াশোনার পাশাপাশি ছবি আঁকা ছিল তার শখ। শেষে কলকাতার গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুল এবং বহুবাজার আর্ট গ্যালারি থেকে অঙ্কনশিক্ষা লাভ করেন। পরে তিনি মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে অঙ্কন প্রশিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
তবে ধীরে ধীরে তার বৈপ্লবিক জীবনে হাতেখড়ি। অন্যান্য বিপ্লবীদের শিক্ষা দিয়েছেন বোমা তৈরি কৌশলের। ধীরে ধীরে সকলের কাছে হয়ে উঠেন অস্ত্রগুরু। তবে রাজা নরেন্দ্রলাল খাঁ এবং অঞ্জলি খাঁর অত্যন্ত স্নেহভাজন ছিলেন হেমচন্দ্র কানুনগো। তাদের অনুগ্রহে হেমচন্দ্র এঁকেছিলেন একাধিক ছবি। ১৯২৭ সালে এঁকেছেন রাজা নরেন্দ্র লাল খানের প্রতিকৃতি। ক্যানভাসে তেল রং দিয়ে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন তার প্রতিকৃতি। এছাড়াও গোপ প্যালেস বর্তমানে যা গোপ কলেজ নামে পরিচিত তার অভ্যন্তরে থাকা একাধিক ছবি নিজের হাতে এঁকেছেন হেমচন্দ্র।
বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের পর কারাবাস শেষে ১৯২১ সালে তিনি বাড়িতে ফিরে এসে ছবি আঁকা, লেখালেখি নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। মেদিনীপুরে ফিরে এসে বেশ কিছুদিন তিনি ছবি এঁকে নিজের জীবন জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করেন।স্বাভাবিকভাবে শুধু বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড নয়, কিংবা ব্রিটিশ হঠাতে বোমা তৈরির কৌশল শেখানো নয়, নারায়ণগড়ের ভূমিপুত্র তথা বিপ্লবী হেমচন্দ্র কানুনগো ছিলেন একজন প্রখ্যাত শিল্পী। যার হাতে আঁকা এক একটি ছবি যেন প্রাণবন্ত, যেন এক একটি ছবির প্রত্যায়িত কপি।





