তবে জানেন কি কোন দোকানে প্রথম শুরু হয়েছিল এই ছাতনার পেড়া তৈরি? ছাতনার পেড়ার পরিচিতি তৈরি করেছিলেন আদি প্রহ্লাদ চন্দ্র ময়রা। ঘরের চালের দোকানের মধ্যেই তৈরি করতেন পেড়া। আজও রয়েছে সেই দোকান, তবে পাল্টেছে ছবিটা। এখনও পাওয়া যায় পেড়া। তবে এই প্রসিদ্ধ মিষ্টান্নের ইতিহাস অনুসন্ধানে বেরিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। ইতিহাসের শুরু এবং শেষ মেলানো একটু কঠিন হচ্ছিল, সেই কারণেই বাঁকুড়ার ছাতনার লৌকিক ইতিহাসের পৃষ্ঠপোষক এবং ক্ষেত্র সমীক্ষক স্বরাজ মিত্র প্রেক্ষাপটটি পরিষ্কার করে দেন। তিনি জানান, ছাতনার পেড়ার প্রসিদ্ধি ছাতনা রাজবাড়ির অন্দরমহল পর্যন্ত ছিল। রানি আনন্দ কুমারীর সময় থেকেই এই বিশেষ মিষ্টান্নের প্রসিদ্ধি ছড়িয়েছিল, যা দেখা গেছে ত্রিগুনা প্রসাদ সিং দেওর আমল পর্যন্ত।
advertisement
“আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন”
১৯৬৭ সালে “আশিতে আসিও না” সিনেমার অভিনেতা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় পেড়া কিনে খেয়েছিলেন। সেই কারণেই প্রসিদ্ধ এই পেড়া তৈরির পদ্ধতি জানতে চাওয়া হল পেড়া প্রস্তুতকারক বলেন, প্রথমে দুধকে গরম করে ফুটিয়ে তৈরি করা হয় ক্ষীর। এবার প্রতি এক কেজি ক্ষীরে মেশানো হয় ১০০ গ্রাম চিনি। তারপর সেই মন্ডকে ভালো করে তৈরি করে হাতে করে, “ছাতনার পেড়া” লেখা ছাঁচে ফেলে তৈরি হয় বিভিন্ন আকারের পেড়া। সব থেকে ছোট পেড়ার দাম ৫ টাকা, মাঝারি সাইজের দাম ১০ টাকা এবং সবচেয়ে বড় পেড়াটির দাম কুড়ি টাকা। স্বাদে এবং গন্ধে দুর্দান্ত। মুখে দিলেই মিলিয়ে যাবে। একদম খাঁটি দুধ দিয়ে তৈরি হয় বাংলার অন্যতম প্রসিদ্ধ এই মিষ্টান্ন, বাঁকুড়া থেকে যার নাম ছড়িয়েছে গোটা ভারতবর্ষে। ছাতনার পেড়া আজও বাঙালির রসনা তৃপ্তির একটি “সফট কর্নার”। এই মিষ্টান্ন এর ইতিহাস তার স্বাদের মতোই মধুর!
নীলাঞ্জন ব্যানার্জী