শাস্ত্রমতে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে জন্ম গণেশের। তাই এই দিনে দেশজুড়ে ধুমধামের সঙ্গে গণেশ চতুর্থী পালিত হয়। মহারাষ্ট্র, গুজরাত-সহ অনেক এলাকায় এই পুজোর আড়ম্বর অনেক বেশি। সেখানে দশ দিন ধরে পালিত হয় গণেশ পুজো। তবে ইদানিং এ রাজ্যেও গণেশ পুজোর চল ব্যাপকভাবেই বেড়েছে। বর্ধমান শহরে জি টি রোড ও তার আশপাশ এলাকায় ৫০টিরও বেশি ছোট বড় গনণশ পুজো অনুষ্ঠিত হয়। তবে এবার সেই পুজোয় বাদ সেধেছে করোনার সংক্রমণ। করোনা পরিস্থিতিতে এবার অনেক জায়গাতেই গণেশ পুজো জৌলুস হারিয়েছে। অনেক জায়গায় এবার মন্ডপ করে পুজো হচ্ছে না। দোকানের ভেতর ছোট প্রতিমা এনে নিয়ম রক্ষার পুজো করছেন অনেক ব্যবসায়ীরা। সুউচ্চ মণ্ডপ থেকে শুরু করে আলোর বাহার, খিচুড়ি ভোগ, হালুয়া, লাড্ডু বিতরণ- সবেতেই এবার কাটছাঁট করা হয়েছে।
advertisement
সুখ-সমৃদ্ধি ,বুদ্ধি, ব্যবসিক সম্পদ বৃদ্ধির কামনায় এই শহরে মূলত ব্যবসায়ীরা গণেশ পুজোর আয়োজন করে থাকেন। তাঁরা বলছেন, করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের জেরে গত ছ'মাস ধরে ব্যবসা একরকম বন্ধের মুখে। উপার্জন নেই বেশিরভাগ বিক্রেতার। তার ওপর করোনার সংক্রমণে সবাই আতঙ্কিত। তাই এ বছর সেভাবে গণেশ পুজোর আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা কেউ কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনাড়ম্বরভাবে যৎসামান্য আয়োজনের মাধ্যমে গণেশ পুজো করছেন।
তবে বোরহাট শ্যাম সেবা মন্ডল এবার প্রথম মণ্ডপ তৈরি করে গণেশ পুজোর আয়োজন করেছে। সেখানে সিদ্ধিদাতার মুখে লাগানো হয়েছে মাস্ক। এক হাতে পদ্মের পাশাপাশি ধরা রয়েছে ফেস কভার। উদ্যোক্তারা বলছেন, জাঁকজমক না থাকলেও নিষ্ঠা রয়েছে পুরোমাত্রায়। বাসিন্দাদের সচেতন করতে আরাধ্য দেবতা মুখে মাস্ক লাগানো হয়েছে। উদ্যোক্তা থেকে ভক্ত সকলেই মুখে মাক্স বেঁধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পূজার্চনায় অংশ নিয়েছেন। অনেকেই গণেশ পুজোকে করোনা পরিস্থিতিতে দুর্গাপুজোর রিহার্সাল হিসেবেও দেখতে চাইছেন। মাস্ক বা ফেস কভারে মুখ ঢেকে দূরত্ব বজায় রেখে আজকের গণেশ পুজোর মতই দুর্গা পূজার আয়োজনও করা সম্ভব বলেই মনে করছেন বাসিন্দাদের অনেকেই।
Saradindu Ghosh