এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা থানার ধরমপুর গ্রামের ৭৪ বছর বয়সী বৃদ্ধা অন্নপূর্ণা পাঁজার সঙ্গে।জানা গিয়েছে, অশীতিপর বৃদ্ধা অন্নপূর্ণা পাঁজার বাপের বাড়ি গড়বেতা থানার ফতেগড় গ্রামে,শ্বশুর বাড়ি চন্দ্রকোনার ধরমপুরে। ধরমপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে স্বামী রাসবিহারী পাঁজা ও তিন ছেলের সংসারে জীবিত অবস্থায় রয়েছেন অন্নপূর্ণা দেবী। অন্নপূর্ণা পাঁজার ছেলেদের দাবি, গড়বেতার ফতেগড় গ্রামে তার দাদুর(অন্নপূর্ণার বাবা) রেখে যাওয়া কিছু সম্পত্তি জমি জায়গা রয়ে গিয়েছে। দাদুর দুই মেয়ের একজন মারা গিয়েছেন এবং বর্তমানে অপর মেয়ে অন্নপূর্ণা পাঁজা তথা তাঁদের মা জীবিত রয়েছেন।
advertisement
দাদুর কোনও ছেলে না থাকায় এবং বর্তমানে তাদের মা অন্নপূর্ণা পাঁজাই বাপের বাড়ির পড়ে থাকা সম্পত্তির উত্তরাধিকার বলে দাবি বৃদ্ধা অন্নপূর্ণা পাঁজার ছেলেদের। তাদের অভিযোগ, মায়ের বাপের বাড়ির পড়ে থাকা সম্পত্তি হাতানোর জন্য ফতেগড় গ্রামের বাসিন্দা সুদর্শন মল্লিক নামের ব্যক্তি ভুয়া শংসাপত্র বের করে প্রতারণার চেষ্টা করছে। তাদের অভিযোগ, গড়বেতার আমশোল গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে তাদের মা অন্নপূর্ণা পাঁজার নামে ডেথ সার্টিফিকেট বের করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন দফতর থেকে তাদের মায়ের নামে ভুয়া শংসাপত্র বের করে মায়ের বাপের বাড়ির সম্পত্তি হাতানোর চেষ্টা করেছেন সুদর্শন মল্লিক।
আরও পড়ুন: ইনিই বিশ্বের ভয়ঙ্করতম স্নাইপার! পৌঁছলেন ইউক্রেনে, ক্ষমতা শুনে কাঁপছে রুশ বাহিনী
বেশকিছু দিন আগে সুদর্শন মল্লিক তাদের মায়ের বাপের বাড়ির জমি জায়গা নিজের নামে করার জন্য গড়বেতা ৩ নং ব্লকের বিএলআরও দপ্তরে জমির রেকর্ডের জন্য আবেদন করেন এবং দপ্তর থেকে এনকোয়ারি করতে গেলে সুদর্শন মল্লিকের প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারেন বৃদ্ধা অন্নপূর্ণা পাঁজার ছেলেরা। ঘটনা জানতে পেরে সুদর্শন মল্লিকের বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোনও সুরাহা মিলেনি বলে অভিযোগ বৃদ্ধার ছেলেদের।
আরও পড়ুন: বিরাট খবর! অধ্যাপক নিয়োগে বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে কেন্দ্র? লাগবে না ডক্টরেট!
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় আমশোল গ্রাম পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বৃদ্ধার ছেলেরা। একজন বৃদ্ধা যিনি এখনও স্বামী ছেলেদের নিয়ে জীবিত অবস্থায় রয়েছেন তার নামে কি করে গ্রাম পঞ্চায়েত ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করে? যদিও এবিষয়ে আমশোল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উমা রাণী মাল জানান, "জন্ম মৃত্যুর সার্টিফিকেট আমরা দিতে চাই না কিন্তু পঞ্চায়েত সদস্যরা চাপ দেয়, সেক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সদস্যদের কথায় কিছু ক্ষেত্রে দিয়ে দিতে হয়। এক্ষেত্রে যদি ভুল হয়ে থাকে তাহলে গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে আলোচনা করে খতিয়ে দেখতে হবে।"
আর যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই সুদর্শন মল্লিক অবশ্য তার ভুলের কথা স্বীকার করে জানিয়েছেন, অন্নপূর্ণা পাঁজা সম্পর্কে তার পিসি হন। তাঁর বাপের বাড়ির পড়ে থাকা একটি জমি আগে তারা নিজেরা চাষ করতো কিন্তু পয়সা নিয়ে তারা জমিটি আমাকে ছেড়ে দেয় বহু বছর ধরে সে চাষ করছে সেটি।সেই জমির কাগজ না থাকায় সে আবেদন করে কিন্তু দপ্তর থেকে মঞ্জুর করেনি বলে জানান সুদর্শন মল্লিক। এমন ঘটনা সামনে আসতেই রীতিমতো হতবাক বৃদ্ধার পরিবার, সুবিচারের আশায় তারা।
---সুকান্ত চক্রবর্তী