ফুটবলার পিন্টুর এই অভিনব স্টাইল যেন ফুটবলের ডিফেন্ডের মতোই সামাজিক ব্যাধিকে দূরে সরিয়েছে। ধান, দূর্বা, আতপ চাল কিংবা বরণ ডালা নিয়ে তার মুখে দাঁড়ানো নয়, দরজার মুখেই ছিল ফুটবল। আর সেই ফুটবলেই কিক দিল সদ্যোজাত। অভিনব এই ঘটনার সাক্ষী রইল জঙ্গলমহল।
মোহনবাগানের এক অন্যতম ফুটবলার পিন্টু। পিন্টু এবং তাঁর সহধর্মিণীর কোল আলো করে জন্ম নিয়েছে এক ফুটফুটে পুত্র সন্তান। তাই সদ্যোজাতকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে প্রবেশ করানোর সময় ফুটবল শটের মাধ্যমে স্বাগত জানালেন পরিবারের সদস্যরা। ফুল দিয়ে সাজানো হয়েছিল বাড়িতে প্রবেশের পথ। সেখানেই প্রবেশের দরজায় রাখা ছিল ফুটবল। সেই ফুটবলে শট দিল সদ্যজাত।
advertisement
পরিবারের আশা, ছেলে যেন বড় হয়ে ফুটবলার হয়! বাবার মতোই নাম করতে পারে চারিদিকে। ওই গ্রামেই বড় হয়েছে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান দলের প্রাক্তন ফুটবলার পিন্টু মাহাতো। জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে কলকাতার চেনা মাঠে এক সময় দাপিয়ে বেড়িয়েছে।
ডার্বিতে জোড়া গোল করে নজর কেড়েছিল জঙ্গলমহলের এই পিন্টু। বাড়িতে অভাব অনটন থাকলেও নিজের জেদ আর কঠোর পরিশ্রমে জায়গা করে নিয়েছিল মোহনবাগান ফুটবল দলে। সেই সময় ইস্টবেঙ্গলের বিপক্ষে জোড়া গোল করেছিল। পরবর্তীকালে ইস্টবেঙ্গল দলেও যোগ দেন। সেখান থেকে নৌবাহিনীতে চাকরি পান।
বর্তমানে ডায়মন্ড হারবার এফসি-র হয়ে মাঠ কাঁপাচ্ছে পিন্টু। ১৯ জুন পিন্টুর স্ত্রী অঞ্জলি দেবী পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। তার নাম রেখেছেন প্রিহান। হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার পর প্রিহানকে বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়িতে স্বাগত জানাতে আগে থেকেই প্রস্তুত পরিবার সহ গ্রামের মানুষজন। স্বাগত জানানোর ভিডিও এখন ভাইরাল।
আরও পড়ুন- আকাশের মুখ ভার, ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস উত্তরবঙ্গের গাঙ্গেয় ও পার্বত্য জেলাগুলিতে
পিন্টু বলেন, “পরিবার এবং গ্রামবাসীদের ইচ্ছে বড় হয়ে যেন ফুটবলার হয় আমার ছেলে। আমি ছোট থেকেই অভাবে মানুষ হয়েছি। ইচ্ছে থাকলেও ছোটো থেকে সেভাবে ফুটবলের শিক্ষা পায়নি। আমি চাই আমার ছেলে যেন বড় হয়ে ভাল মানের ফুটবলার হতে পারে।”
গ্রামবাসী রামতনু মাহাতো, অমিত মাহাতোরা বলেন, “আমাদের গ্রামে অধিকাংশই ফুটবল ভালবাসে। গ্রামে ইস্টবেঙ্গল- মোহনবাগান দু’দলেরই সমর্থক রয়েছে। আমাদের গ্রাম থেকেই পিন্টুর উত্থান। আমরা চাই এই গ্রাম থেকে আরও অনেকে বড় ফুটবলার গড়ে উঠুক। পিন্টুর ছেলেও যেন ভাল মানের ফুটবলার হয়ে ওঠে, এটাই আমাদের আশা।”
রঞ্জন চন্দ