ছোট থেকে পড়াশুনা ছেড়ে লেগে পড়া বাঁশি নিয়ে। বাঁশের বাঁশি নিয়ে ধ্যান জ্ঞান। কিন্তু সংসার চালাতে ভরসা হাটে গিয়ে সবজি বিক্রি। নামের সঙ্গে লক্ষ্মী থাকলেও সংসারে লক্ষ্মীলাভে সারাদিন বেশ হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয় তাকে।
আরও পড়ুন: ছাদে পুড়ছে জলের ট্যাঙ্ক, ট্যাপ খুললেই বেরোচ্ছে আগুনের মত গরম জল! ৪ সহজ টিপসেই হবে কনকনে ঠান্ডা
advertisement
পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় থানার রেডিপুরের বাসিন্দা লক্ষ্মীকান্ত পাইকারা। প্রত্যন্ত গরিব পরিবার থেকে বড় হয়ে ওঠা তার। মাত্র চতুর্থ পড়ার পর বাঁশির প্রতি ঝোঁক থাকায় জীবনটা শুরু করেছিলেন বাঁশির সুরে।গ্রামেরই গুরুর কাছ থেকে তালিম নিয়ে শুরু তার বাঁশুরির জীবন। ছোট থেকে বাউলগান-সহ একাধিক সামাজিক অনুষ্ঠানে সুর তুলেছেন। রাত জেগে বিভিন্ন যাত্রাদলে নানা আবহ সৃষ্টি করেছেন লক্ষ্মীকান্ত বাবু। কিন্তু নিজের জীবনের আবহে ভাটা। সংসার চলে কোনওভাবে।
আরও পড়ুন: বলুন তো কোন প্রাণীর ৭৫০ টি পা রয়েছে? ৯৯% লোকজনই ভুল উত্তর দিয়েছেন, আপনি জানেন কি?
ছোট থেকেই বাঁশের বাঁশি নিয়ে শুরু জীবন। বয়স যখন সবে ২০ গোড়ায়, শুরু তার কর্মজীবন। কলকাতা, হাইরোড, বেলদার বিভিন্ন যাত্রাদলে বাঁশির আবহ সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু দিন যত গড়িয়েছে, বাঁশির সুর আর জোগাতে পারেনি সংসারের অর্থ। ফলত সংসারের চাকা ঠেলতে ভরসা বিভিন্ন হাটে হাটে গিয়ে কাঁচা সবজি বিক্রি করা।আর সঙ্গে দু’একটা সাংস্কৃতিক প্রোগ্রাম।সেভাবেই বছর দশকের সেই লক্ষ্মীকান্ত আজ পঞ্চাশের দোরগোড়ায়।শুধু ব্লকস্তর কিংবা জেলাস্তর নয় রাজ্যস্তরের যুব প্রতিযোগিতায়ও অংশ নিয়েছেন লক্ষ্মীকান্ত বাবু, জিতেছেন পদকও।
সকাল কিংবা বিকেল হলেই তাঁকেই দৌড়তে হয় হাটে হাটে।আসলে সেই কাঁচা সবজি বিক্রির পরই জুটবে অন্নসংস্থান। লক্ষ্মীকান্ত পাইকারা চান সরকারিভাবে সাহায্য করা হোক তাকে। নিদেনপক্ষে সরকারী চাকরি। কোনও অনুষ্ঠানে যেন ডাক পান তিনি। সরকারি কোনও সাহায্য সহযোগিতা পেলে হয়ত শিল্পীর বাঁশির সুরটা বেঁচে থাকবে।
বয়সের ভারে রোগও থাবা বসিয়েছে লক্ষ্মীকান্ত বাবুর পরিবারে। ছেলে মেয়ে স্ত্রী সংসার। সেদিনের বাঁশি আজ তুলে না তেমন আবহ, সংসার জুড়ে শুধু করুণ সুর। সংসার-দারিদ্র এর মাঝেই যেন চাপা পড়ছে শিল্পীর শিল্পসত্ত্বা।
রঞ্জন চন্দ





