চৈতন্য মহাপ্রভুর অন্যতম শিষ্য রঘুনাথ দাস গোস্বামী। তাঁর বাড়িতেই বসে ৫১৭ বছরের পুরনো মাছের মেলা। একদিনের এই মেলাকে কেন্দ্র করেই বিভিন্ন পসরা নিয়ে বসে বিভিন্ন দোকানিরা। মেলার সূত্রপাত হয় গোবর্ধন গোস্বামীর ছেলে রঘুনাথ দাস গোস্বামী বাড়িতে প্রত্যাবর্তনের পরই। ওই এলাকার জমিদার ছিলেন গোবর্ধন গোস্বামী, তাঁরই ছেলে রঘুনাথ সংসার ত্যাগ করেন সন্ন্যাস নেবেন বলে। তিনি মহাপ্রভু চৈতন্যের পারিষদ নিত্যানন্দের কাছে দিক্ষা নেবেন বলে তাঁর কাছে যান পানিহাটিতে।
advertisement
আরও পড়ুন: ২২ জানুয়ারি জাতীয় ছুটি? রাম মন্দির উদ্বোধন উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণার সম্ভাবনা
তবে তাঁর বয়স তখন মাত্র ১৫ হওয়াতে তাঁকে তিনি দিক্ষা দেননি। তবে তাঁর ভক্তির পরীক্ষা নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন নিত্যানন্দ। দীর্ঘ ৯ মাস পর বাড়ি ফেরে সে। সেই আনন্দে বাবা গোবর্ধন গোস্বামী গ্রামের মানুষকে খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। গ্রামের মানুষ তাঁর ভক্তির পরীক্ষা নেওয়ার জন্য কাঁচা আমের ঝোল ও ইলিশ মাছ খাওয়া আবদার করে। তিনি ভক্তদের বলেন, বাড়ির পাশে আম গাছ থেকে জোড়া আম পেড়ে আনতে এবং পাশের জলাশয়ে জাল ফেলতে। সেই অনুযায়ী জাল ফেলতেই মেলে জোড়া ইলিশ ও আম আনতেই অবাক হয়ে যান গ্রামের মানুষ।
আরও পড়ুন: স্বপ্নে সাপ দেখতে পাওয়া কীসের ইঙ্গিত জানেন? স্বপ্নশাস্ত্র অনুযায়ী এর অর্থ জানলে চমকে যাবেন!
তাই থেকে প্রতি বছর ভক্তরা রাধা গোবিন্দ মন্দিরে পুজো দেওয়ার পাশাপাশি মাছের মেলার আয়োজন করে। সেই থেকেই পয়লা মাঘ উত্তরায়ন মেলা চলে আসছে। দূরদূরান্ত থেকে বহু মাছ ব্যবসায়ী নদী পুকুর ছাড়াও বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের পসরা নিয়ে বিক্রি করে। হুগলি ছাড়াও বর্ধমান, হাওড়া, নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া থেকেও মানুষ এই মেলায় আসে। ৫০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা কেজি মাছ বিক্রি হয়। শুধু মাছ কিনেই নিয়ে যায় না। অনেকেই পাশের আম বাগানে মাছ ভেজে পিকনিকের আয়োজনও করে নেয়।
রাহী হালদার