হুগলি জেলার আরামবাগের বাসিন্দা মিঠু রায় সামন্ত মা হতে চেয়েও কিছু সমস্যা থাকায় তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি । ২০১৪ সালে তাঁর প্রথম সন্তান মারা যায় । এর পর আরও তিন বার তার সন্তান গর্ভেই নষ্ট হয়ে যায় । তার শরীরে ছিল অন্য শারীরিক সমস্যাও। একাধিক ডাক্তাররা স্পষ্ট জানিয়ে দেন তাঁর পক্ষে মা হওয়া সম্ভব নয় । ঠিক তার পরই তাঁর এক আত্মীয়র মাধ্যমে তিনি যোগাযোগ করেন বীরভূমের সিউড়িতে ডাক্তার দেবাশিস দেবাংশীর সাথে । তার পরই বীরভূমের সিউড়ির চিত্তরঞ্জন হেলথ ইনস্টিটিউটে শুরু হয় তাঁর বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষা ।
advertisement
আরও পড়ুন : শুরু স্বাধীনতার আগে, ৮৮ বছর ধরে পরিষেবা দিয়ে পুরস্কৃত সিউড়ির সমবায় ব্যাঙ্ক
অনেক জটিলতা কাটিয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রথম বীরভূমের বুকে তিনি জন্ম দেন ফুটফুটে টেস্টটিউব কন্যাসন্তানের । অন্য জেলায় বা রাজ্যে টেস্টটিউব বেবির খরচা যেখানে দুই লাখ টাকার কাছাকাছি বীরভূমের সিউড়িতে তা মাত্র পঁচাশি হাজারের মধ্যে । নতুন মা মিঠু রায় সামন্ত জানান , ‘‘আমি মা হওয়ার জন্য অনেক জায়গায় ঘুরেছি । বিভিন্ন জেলা, বিভিন্ন রাজ্য এমনকি রাজ্যের বাইরেও গিয়েছি কিন্তু ডাক্তাররা জানিয়ে দেন আমি মা হতে পারব না । তার পরই আমি খোঁজ পাই ডাক্তার দেবাশিষ দেবাংশীর । যোগাযোগ করি ওঁর সাথে । তার পর অনেক শারীরিক পরীক্ষার পর আমি আমার সন্তানের জন্ম দিই । যেখানে ডাক্তাররা বলে দিয়েছিলেন আমি মা হতে পারব না, সেখানে ডাক্তারবাবুর জন্য আজ আমি মা হতে পেরে খুব খুশি।’’
আরও পড়ুন : ছুটির বিকেলে দিঘার সৈকতে জীবন্ত ডলফিন, পর্যটকদের মধ্যে সেলফি তোলার হিড়িক
ডাক্তার দেবাশিস দেবাংশী বলেন , ‘‘ ২০০৭ সালে বীরভূমে প্রথম আমি কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি একটা অংশ হিসেবে শুরু করি৷ তখনই আমার স্বপ্ন ছিল আইভিএফ বা কৃত্রিম প্রজনন প্রক্রিয়ার যেটা অন্তিম পর্যায়, সেটা করব এবং বীরভূমে বসে আমরা টেস্টটিউব বেবি করতে পেরেছি। মিঠু রায় সামন্ত আমার কাছে মা হওয়ার ইচ্ছে নিয়ে এসেছিলেন । তবে তাঁর শরীরে অনেক জটিলতা থাকা সত্ত্বেও তিনি টেস্টটিউব বেবির জন্ম দিয়েছেন এটাই আমাদের কাছে বিরাট সাফল্য । অবশ্যই তিনি ও তাঁর বাড়ির লোক আমাদের ওপর ভরসা রেখেছিলেন এবং অনেক দূর থেকে তারা সিউড়ির মতো জায়গায় এসেছিলেন । এটা শুধু আমাদের সাফল্য নয়, এটা বীরভূমেরও একটা বড় সাফল্য । আর এই সাফল্যে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত।’’