ঝাড়গ্রাম: বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছারখার হয়ে গেল একটি গোটা বাড়ি। সেই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল বাড়ির এক বয়স্ক সদস্যের। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়া থানার অন্তর্গত তাল গ্রামে, মঙ্গলবার রাতে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন মঙ্গল মল্লিক (৭২)। অগ্নিকাণ্ডের হাত থেকে প্রাণে বেঁচেছেন পরিবারের দুই মহিলা সদস্য—সন্ধ্যা মল্লিক ও সবিতা মল্লিক। সন্ধ্যা মল্লিক নিহত মঙ্গল মল্লিকের স্ত্রী এবং সবিতা মল্লিক তাঁর বৌমা।
advertisement
ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান বেলিয়াবেড়া থানার ওসি নীলু মণ্ডল সহ থানার অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। চলে উদ্ধার কাজ। অন্যদিকে মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনার পরেই বুধবার ঘটনাস্থলে যান গোপীবল্লভপুর দুই ব্লকের বিডিও রাহুল বিশ্বাস, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শর্বরী অধিকারী, পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ টিঙ্কু পাল সহ প্রশাসনের অন্যান্যরা। ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই দুই মহিলার হাতে শুকনো খাবার, রান্নার বাসনপত্র, কম্বল ও জামাকাপড় তুলে দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাল গ্রামের ঘিঞ্জি এলাকায় মঙ্গল মল্লিকদের অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া মাটির দোতলা বাড়িটি অবস্থিত। মঙ্গলের ছেলে ঝন্টু মল্লিক তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে মণিপুরে কাজ করেন। বাড়ির দোতলায় নিয়মিত রান্না হত বলে জানা গিয়েছে এবং সেখানে প্রচুর জ্বালানি কাঠ মজুত ছিল। মঙ্গলবার রাতেও দোতলায় রান্না চলছিল বলে পুলিশের একটি সূত্রে দাবি। ঘটনার সময় বৃদ্ধ মঙ্গল মল্লিক দোতলাতেই ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ও বৌমা নিচতলায় অবস্থান করছিলেন।
মঙ্গলবার রাত আনুমানিক আটটা পনেরো নাগাদ দোতলায় আগুন লাগে। সেই সময় সবিতা মল্লিক বাড়ির বাইরে ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সবিতা কোনওক্রমে তাঁর শাশুড়ি সন্ধ্যা মল্লিক এবং বাড়িতে থাকা ছাগলগুলিকে উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে আসতে সক্ষম হলেও দোতলায় আটকে পড়েন মঙ্গল মল্লিক। প্রতিবেশীরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও দমকলকে খবর দেন এবং আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করেন। ঝাড়গ্রাম থেকে দমকলের একটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে ততক্ষণে পুরো বাড়িটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়। গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় মঙ্গল মল্লিককে উদ্ধার করে তপসিয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার পর বেঁচে যাওয়া দুই মহিলা আপাতত এলাকার আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, রান্নার সময় উনুনের আগুন থেকেই এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে শর্ট সার্কিট থেকেও আগুন লাগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
