#কোন্নগর: "বাঘ নয় , বাঘরোল "- বনদপ্তরের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীদের এই বলে আশ্বস্ত করলেও আতঙ্ক কাটছে না হুগলীর কোন্নগরে।
শহরের রাস্তায় হেঁটে চলে বেড়াচ্ছে বাঘ! এমনই আতঙ্ক ছড়িয়েছে কোন্নগরে ৷ হুগলি জেলার কোন্নগরের কানাইপুরের বাসাই এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে বাঘের আতঙ্কে ঘুম উড়েছে এলাকাবাসীর। গ্রামের দিকে চাষের জমিতে পায়ের ছাপে নতুন করে আতঙ্ক ছড়ায় । সোমবারের পর আজ, মঙ্গলবারও অজানা জন্তুর পায়ের ছাপ স্থানীয় বাসিন্দাদের নতুন করে আতঙ্কিত করে তুলেছে । বাঘ নয়, পায়ের ছাপ বাঘরোলের। গতকাল জানিয়েছিলেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেও 'বাঘে'র আতঙ্ক কাটছে না। খোদ বনমন্ত্রীর নির্দেশে এলাকায় 'বাঘে'র সন্ধানে চিরুনি তল্লাশি চালিয়েছেন বনদফরের কর্মী-আধিকারিকরা। কিন্তু বাঘ তো দূর অস্ত, কোনও অজানা জন্তুরও খোঁজ পাননি তাঁরা।
advertisement
মঙ্গলবার এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, স্থানীয় বাসিন্দাদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ এখনও স্পষ্ট। সব জায়গাতেই বাঘ নিয়ে আলোচনা। চাষের জমিতে অজানা প্রাণীর পায়ের ছাপ দেখা যাচ্ছিল ৷ আজ আবার নতুন করে গ্রাম সংলগ্ন জলাভূমি লাগোয়া চাষের জমিতে অজানা জন্তুর একাধিক পায়ের ছাপের দেখা মিলেছে। সোমবার ভোর রাতে একটি কারখানার সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে বাঘের মত দেখতে প্রাণীর ছবি। এরপরই এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। আতঙ্কে লাঠিসোটা নিয়ে এলাকায় বেরিয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। জলাশয় গুলিতে মাছ থাকায় সেই লোভেই বাঘরোল বা বনবিড়ালের আনাগোনা থাকতেই পারে বলে মত বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞদের।
বনদপ্তর বাঘরোল বা বনবিড়ালের যে কথা বলছে, স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁর সঙ্গে একমত হতে পারছেন না। তাঁদের কথায়, খাঁচাবন্দি করে দেখাক অজানা প্রাণীটি আসলে কী? তবেই আতঙ্ক দূর হবে। এলাকায় আর কোনও এই ধরনের অজানা জন্তু রয়েছে কিনা এবং অজানা জন্তুর গতিবিধি লক্ষ্য রাখতে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে ১০ থেকে ১২টি সিসি ক্যামেরা লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধান আচ্ছেলাল যাদব বলেন, এলাকায় সিসি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। অজানা জন্তুর গতিবিধি জানতে আমরা সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালাব । সেই ধরনের কোন কিছু ক্যামেরাবন্দি হলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে বনদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে জন্তুটির সম্পর্কে নিশ্চিত হব।
পঞ্চায়েত প্রধানের আরও দাবি, সিসিটিভি ফুটেজ যে জন্তুটিকে দেখা গিয়েছে সেটি বাঘ নয়। ফিশিং ক্যাট । বনদফরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আমরা এলাকায় নজর রাখছি। এদিন এলাকা পরিদর্শনে যান স্থানীয় বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। তিনি এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত করেন। তবে প্রবীরবাবু এলাকার মানুষজনকে আশ্বস্ত করলেও বিধায়কের সামনে নিজেদের আতঙ্কের কথা স্পষ্ট করেন অনেক বাসিন্দা। বিধায়ক তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের নিরাপদে রাখা আমাদের কর্তব্য’।