প্রশাসনের নজর এড়িয়ে দেদার চলছে প্লাস্টিক ব্যবহার। আর এর থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে মৃৎশিল্পদের প্রাধান্য দিতেই বোলপুর শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতীর কলাভবনে বিশেষ প্রদর্শনী তুলে ধরেছেন কোরিয়ান চিত্রশিল্পী লি-জং-কোয়ান।
প্রসঙ্গত, গত প্রায় ১০ বছর ধরে এই শিল্পী এশিয়ার মধ্যে দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, ইউরোপ-সহ বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ করেছেন। প্রতিটি দেশ থেকেই সংগ্রহ করেছেন বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান। তা প্রয়োগ করেছেন তাঁর নিজের শিল্পীসত্ত্বায়।
advertisement
আরও পড়ুন- এত কম খরচেও হয় ‘ডায়ালিসিস’? অবিশ্বাস্য…! কিডনির সমস্যার সমাধান করুন এখানেই
প্রসঙ্গত, সময়টা ১৯৯৭ সাল। শান্তিনিকেতনে কলাভবনে পড়াশোনা করার সুবাদে প্রত্যক্ষ করেছেন মাটির ভাঁড়, মাটির থালা, বাটি, হাঁড়ি-সহ অন্যান্য পাত্র। কাঁচামাটি, খড়, বাঁশ, কাপড় দিয়ে লোকজ শিল্প পুতুলকে বিভিন্ন রং চড়িয়ে পোশাক ও চোখ মুখ এঁকে তুলে ধরেছেন।পাশাপাশি মাটির ভাঁড়কে নিয়ে বিশেষত মাটির পাত্রে রান্না করা খাবার কিংবা মাটির ভাঁড়ের চায়ের স্বাদ প্রসঙ্গে জানেন কলা ভবনের এই শিল্পী। কারণ বোলপুর শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন রেস্তোরাঁর মধ্যে মাটির পাত্রে খাবার খাওয়ার প্রথা রয়েছে। সেখানেই তিনি অনুভব করেছেন মাটির পাত্রের স্বাদ।
প্লাস্টিকের সংস্পর্শে কোনও গরম কিছু আসলেই বিষক্রিয়া তৈরি করে। আর সেখান থেকেই তৈরি হয় ক্ষতিকর রাসায়নিক। যা শরীরের সঙ্গে মিশলে হতে পারে ক্যানসারের মতো জটিল রোগ। কিন্তু মাটির ভাঁড়ে এসবের আশঙ্কা নেই। তাই পোড়া মাটির ভাঁড়কে নিয়েই শিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন পরিবেশগত শৈল্পিক নিদর্শন।
আরও পড়ুন- তাপমাত্রার পারদ আবারও নিম্নমুখী! আবহাওয়ার ভোলবদল! কোন কোন জেলায় হাড় কাঁপানি ঠান্ডা
পাশাপাশি গবেষণা শুরু করেন বিশ্বভারতীর ছাত্র অরিজিৎ রায়। তিনি বলেন, “পরিবেশের কথা মাথায় রেখেই প্লাস্টিক বর্জন করা উচিত সকলের। মাটির ভাঁড়ে চা ঢাললেই পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়।মাটিতে খনিজ, ফসফরাস, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামের মতো উপাদান থাকে তা শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। মাটির ভারে চায়ে চুমুক দিলেই ক্লান্তি দূর হয়।”
কোরিয়ান চিত্রশিল্পী লি-জং-কোয়ান জানান, প্রায় ৪,৭০০টি মাটির ভাঁড় দিয়েই বিভিন্ন ধরনের কারুকার্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বিশেষভাবে আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে প্রাকৃতিক উপাদানের মাটির ভাঁড়গুলিকে। বোলপুর শান্তিনিকেতন আগত পর্যটকেরা কলা ভবনের এই প্রদর্শনী দেখছেন এবং ছবি ক্যামেরাবন্দি করছেন।
সৌভিক রায়