পরিযায়ী পাখিদের ভিড়ে আপনিও উড়ে যাবেন ডানা মেলে। সঙ্গে নৌকোতে বেড়াবেন ভেসে। মনে হবে ছলকাতে ছলকাতে এগিয়ে চলেছেন সেই দূরে। তাই পুজোর ছুটিতে একটু প্রকৃতির কোলে সময় কাটাতে চাইলে, সাতপাঁচ না ভেবে ঘুরে আসুন চুপির চর।
বর্ধমান জেলার (East Bardhaman) পূর্বস্থলীর কাষ্ঠশালী গ্রামেই আছে অশ্বক্ষুরাকৃতি এক জলাভূমি যা চুপির চর নামে পরিচিত। এই জলাভূমিটি কয়েক দশক আগে গঙ্গার অংশ ছিল। এখানকার বাসিন্দারা একে বলে থাকেন ছাড়ি গঙ্গা। শীতকালে হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি দূর দূরান্ত থেকে এসে বাসা বাঁধে এই অনন্য সুন্দর জলাভূমির চারপাশে। পাখি দেখার সবথেকে ভাল সময় ভোর ও বিকাল। একটি নৌকা ভাড়া করে বেড়িয়ে পড়লেই হল। নৌকা ভাড়া লাগে ঘণ্টায় ১৫০ টাকা। একবারে চার জন ওঠা যায় নৌকাতে। ঘণ্টা তিনেক ঘুরলেই দেখা মিলবে ভিন্ন প্রজাতির পাখিদের। এই নৌকা আবার দাঁড় টানা, তাই আপনার বেশ ভালই লাগবে নৌকাবিহার।
advertisement
আরও পড়ুন- ইতিহাসে ডুব দিতে পুজোয় ছোট্ট ছুটিতে আসুন বল্লাল সেনের সাম্রাজ্যের ভগ্নাবশেষে
কী কী দেখতে পারবেন আপনি?
পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে এখানে রয়েছে অসপ্রে, রুডি, স্মল প্রাটিনকোল, গ্রিন বি ইটার শেলডাক, রিভার ল্যাপ, গ্রে হেরন,উইং পার্পল হেরন, রেড ক্রেস্টেড পোচার্ড সহ অন্যান্য পাখি।
কীভাবে যাবেন ?
কলকাতা থেকে ট্রেনে গেলে আপনাকে নামতে হবে পূর্বস্থলী স্টেশনে। ট্রেনে সময় লাগবে প্রায় আড়াই ঘণ্টা। স্টেশন থেকে বাইরে যেতেই মিলবে টোটো। উঠে পড়বেন টোটোতে, ভাড়া লাগবে ২০ টাকা। পাঁচ কিলোমিটার দূরেই চুপির চর।
আরও পড়ুন- নাগরিক জীবন থেকে দূরে আরণ্যক স্বাদ পেতে পুজোয় আসুন বিভূতিভূষণ অভয়ারণ্যে
কোথায় থাকবেন?
থাকার জন্য আছে পঞ্চায়েত সমিতির পরিযায়ী আবাস, এ ছাড়াও জলাভূমির পাশেই চারটি কটেজ নিয়ে তৈরি হয়েছে বেসরকারি আবাস। এখানেও থাকতে পারেন আপনি। তাহলে আর কী ভাবছেন, বেড়িয়ে পড়ুন ব্যাগ গুছিয়ে, ক্যামেরা নিয়ে। অবশ্য মুঠো ফোনেও দিব্যি কাজ চালিয়ে দেবে।
হাতে একটু বেশি সময় থাকলে যেতে পারেন কাঠিয়াবাবার আশ্রম, কপিলমুনির আশ্রম। এরপর ঘুরতে ঘুরতে আপনি পৌঁছে যেতে পারেন নতুন গ্রামে। যেখানে গেলে আপনি নানা ধরনের কাঠের পুতুল পাবেন। গ্রামে ঘুরলেই মা বোনেদের শিল্পী সত্ত্বার দক্ষতা চাক্ষুষ করতে। যদি এসবের পরও মনে হয় হাতে সময় আছে তাহলে যেতে পারেন নবদ্বীপ, কৃষ্ণনগর আর মায়াপুর।
এ বার ফেরার পালা। ফেরার সময় কালনার ১০৮ শিবমন্দির আর হংসেশ্বরী মন্দির দর্শন করলে মন্দ হবে না। মাখা সন্দেশের প্যাকেটটা নিয়ে যখন ট্রেনে হালকা করে গা এলিয়ে দেবেন। চোখ বুজে আসবে আপনার। ডানা মেলা পাখিরা কখন আপনার মনের ভিতর গিয়ে উড়ে বেড়াবে আপনি বুঝতেই পারবেন না। এভাবেই পাখিদের দেশে ভেসে আবার বাড়ি ফিরবেন আপনি।
(প্রতিবেদন- মালবিকা বিশ্বাস)