নিজের চাকুরিজীবনের অল্প বেতন থেকে বেশিরভাগটাই খরচ করেন সমাজসেবামূলক কাজে। কিন্তু এত কম টাকায় তো সম্ভব নয়—তাই এলাকায় বহু মানুষের সাহায্যের হাতও তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। সবার একযুগের শক্তিতেই আজ এগরা শহরে পরিচিত নাম সমাজসেবী উজ্জয়নী। রাত-বিরেতে কোনও মানুষের রক্তের প্রয়োজন পড়লে, অসুস্থ হয়ে পড়া পথশিশু বা আহত অবলা পশুকে বাঁচাতে সাহায্যের দরকার পড়লে সর্বপ্রথম উজ্জয়নীর কাছেই খবর যায়। খবর পেলেই তিনি ছুটে যান সায়ন, সুভাষ, অঙ্কিতা-সহ তাঁর নিবেদিতপ্রাণ দলের সদস্যদের নিয়ে।
advertisement
মানবসেবা শুধু চিকিৎসা বা খাবারেই নয়—শিক্ষাতেও নিশ্চিত হতে হবে। তাই নিজের বাড়িতেই তিনি তৈরি করেছেন দরিদ্র পরিবারের জন্য ছোট্ট একটি লাইব্রেরি। যেখানে বইপত্র নিয়ে পড়াশোনা করতে পারে মেধাবী কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে পিছিয়ে থাকা ছেলেমেয়েরা। এলাকার অনেকেই নিজেদের পুরোনো কিংবা নতুন বই এখানে দিয়ে যায়, যাতে আরও বেশি ছাত্রছাত্রী এই সুবিধা নিতে পারে। সমাজের উন্নতির জন্য বইয়ের চেয়ে বড় অস্ত্র আর কীই বা হতে পারে? তাই শিক্ষার মাধ্যমে অনেক স্বপ্নকে উজ্জ্বল করে তুলতে চান এই সমাজসেবী শিক্ষিকা।
শীতের সময় পথে থাকা মানুষের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দেওয়া, দুর্গাপুজোর আগে দরিদ্র পরিবারের শিশুদের হাতে নতুন জামা পৌঁছে দেওয়া কিংবা কারোও জরুরি চিকিৎসার জন্য ফান্ড কালেকশন—সবক্ষেত্রেই সমান ভাবে এগিয়ে আসেন উজ্জয়নী। দিন-রাত লড়াই করে চলেছেন তিনি শুধুমাত্র একটি বিশ্বাস নিয়ে—মানুষ মানুষের জন্য। তাঁর কাজ যেন রোল মডেল হয়ে উঠেছে যুবসমাজের সামনে—প্রমাণ করে দিয়েছেন, ইচ্ছা থাকলেই সমাজের জন্য বড় কিছু করা সম্ভব।