এগরার কলেজ পড়ুয়া অনিন্দিতা গারু। বৃহস্পতিবার ভাইফোঁটার দিন নিজের ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার আগে গাছকে ফোঁটা দিলেন তিনি। মানুষের মতোই গাছেরও জীবনের মূল্য আছে, এই বার্তা সমাজে ছড়িয়ে দিতে তিনি বেছে নিয়েছেন এক অভিনব পথ।
advertisement
অনিন্দিতা এগরা সারদা শশীভূষণ কলেজের বাংলা স্নাতকোত্তর বিভাগের ছাত্রী। তাঁর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপর জেলার এগরার পাহাড়পুর গ্রামে। বৃহস্পতিবার সকালে স্নান সেরে ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার আগে অনিন্দিতা নিজের বাড়ির তুলসীতলায় একটি নতুন গাছ রোপণ করেন। এরপর নিয়ম মেনে সেই গাছকে ফোঁটা দেন, রাখি বাঁধেন এবং প্রদীপ জ্বেলে প্রার্থনা করেন, এই গাছ যেন সুস্থভাবে বেড়ে ওঠে ও আশেপাশের মানুষকে অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখে। সেই সময় অনিন্দিতার পাশে ছিলেন তাঁর দাদা।
এই কলেজ ছাত্রীর মতে, “ভাই যেমন বোনের সুরক্ষা করে, তেমনই গাছও মানুষের সুরক্ষা করে। গাছ আমাদের ছায়া দেয়, ফল দেয়, অক্সিজেন দেয়, তবুও মানুষ অবলীলায় গাছ কেটে ফেলে। তাই আমি চেয়েছি সবাই যেন বুঝতে পারে, গাছও আমাদের পরিবারের সদস্যের মতো।” তাঁর এই ভাবনা ইতিমধ্যেই স্থানীয়দের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে অনিন্দিতা এই উদ্যোগকে অনেকেই উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। স্থানীয় শিক্ষক থেকে শুরু করে প্রতিবেশীরা বলছেন, “আজকের প্রজন্মের এই ভাবনা সত্যিই প্রশংসনীয়। যদি প্রত্যেকেই গাছকে পরিবারের অংশ ভাবেন, তাহলে পৃথিবী আরও সুন্দর হবে।”
গাছ লাগানোই যথেষ্ট নয়, তার যত্ন নেওয়াটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ, এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন অনিন্দিতা। তিনি বলেন, “অনেকেই ফটো তুলে গাছ লাগায়, কিন্তু পরে ভুলে যায়। আমি চাই গাছের যত্ন নেওয়াটাও একটা নিত্য অভ্যাসে পরিণত হোক।” ভাইফোঁটার মতো পারিবারিক উৎসবে গাছকে ফোঁটা দিয়ে তিনি দেখিয়ে দিলেন, ভালবাসার বন্ধন শুধু রক্তের সম্পর্কে সীমাবদ্ধ নয়, তা প্রকৃতির সঙ্গেও গড়ে তোলা যায়। পরিবেশ রক্ষার এমন আবেগময় বার্তা ভাইফোঁটার দিনে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
অনিন্দিতার এই ছোট্ট উদ্যোগ প্রমাণ করে, উৎসব মানে শুধু আচার-অনুষ্ঠান নয়, তার মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে সমাজ ও প্রকৃতির প্রতি গভীর দায়বদ্ধতার বার্তা। গাছও যে আমাদের ভাইয়ের মতো, এই ভাবনা থেকেই হয়তো একদিন শুরু হবে প্রকৃতি বাঁচানোর এক নতুন অধ্যায়।