আটের দশকে শর্মিলা ঠাকুর, দীপঙ্কর দে ও অমল পালেকরের ‘হোতাম যদি তোমা পাখি’ গানটির শুট হয়েছিল বকখালিতে। একটা সময় এমনটাই ছিল বকখালি। ঘন ঝাউবন.. উঁচু বালিয়াড়ি, নিরিবিলি সমুদ্র সৈকত, শান্ত.. রোম্যান্টিক.. এখানেই সাদা বালি কথা বলে.. খুনসুটি করে লাল কাঁকড়া.. দোল খায় নোনা হাওয়া... হাতের কাছেই হাতছানি.. এখানে আকাশ নীলের নীচে... বালির নরম উষ্ণতা.. ঘন জঙ্গলে গোপন সবুজ... ৷
advertisement
কলকাতা থেকে দিঘা যতটা কাছে, তার থেকেও বেশি কাছে বকখালি। তবুও ব্রাত্য ছিল সুন্দর এই টুরিস্ট স্পটটি। বাম আমলে পরিকাঠামোর কোনও উন্নয়নই হয়নি। অবহেলায় নষ্ট হয়ে যায় সমুদ্র সৈকত-সহ অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদও। পুজোর ছুটি বা উইকএন্ডে অনেক পর্যটকই বকখালিকে বেছে নিতেন না। গতবছর নদীপথে বকখালি ভ্রমণে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা দিয়েছিলেন বিশ্বের দরবারে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি পাবে এই জায়গা। সেইমতই শুরু হয়েছে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ। কলকাতা থেকে সরাসরি বকখালি যাওয়ার জন্য হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদীর উপর নতুন ব্রিজের কাজ শেষের পথে। সমুদ্রের পাশে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে রাস্তা তৈরি শুরু হয়েছে। যার উপরে তৈরি হয়েছে কাঠের সেতু। জঙ্গলের ভিতরে যাওয়ার নতুন রাস্তার দুই ধার উঁচু করে ঘেরা হয়েছে। ফেলা হচ্ছে সাদা বালি, ঢালাই হবে রাস্তা। এই রাস্তা ধরে সরাসরি পৌঁছনো যাবে খাঁড়ির চরায়।
শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার ট্রেনে করে প্রথমে নামখানা । এরপর হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদী নৌকায় পেরিয়ে বকখালি যেতে ২৫ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হয়। গাড়ি নিয়ে গেলে ভূতল পরিবহণ দফতরের ভেসেলে করে গাড়ি পারাপার করা যায়। আগামী ছ’মাসের মধ্যে আর গাড়ি পারাপার করার জন্য ভেসেলের সাহায্য নিতে হবে না। ওভার ব্রিজের কাজ তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে। আশ্বাস দিয়েছেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী।
বকখালির আশেপাশেই হেনরিজ আইল্যান্ড, ফ্রেজারগঞ্জের মত একাধিক বেড়ানোর জায়গা। বকখালির উন্নয়ন হওয়ায় এই সমস্ত এলাকাতেও পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়ে নয়.. বকখালি আছে বকখালিতেই.. তাকে নতুন করে সাজিয়েছে রাজ্য সরকার। বকখালির গায়ে ভেজা বালির ছিটে বুকে নিয়ে অপেক্ষা..পর্যটকদের..