জমিদার ভোলানাথ নন্দের তিন পুত্রের মধ্যে গঙ্গাধর নন্দ ছিলেন এ এলাকার শিক্ষা বিস্তারের অন্যতম পথিকৃত। তিনি একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন—মুগবেড়িয়া গঙ্গাধর হাই স্কুল, বেলদা গঙ্গাধর একাডেমি, ললাট গঙ্গাধর অ্যাকাডেমি এবং মুগবেড়িয়া গঙ্গাধর মহাবিদ্যালয়। শুধু স্কুল–কলেজ প্রতিষ্ঠাই নয়, পড়াশোনায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া বহু ছাত্রের শিক্ষার দায়িত্বও নিজের কাঁধে তুলে নেন তিনি। তাঁর উদ্যোগেই এই অঞ্চলে ধীরে ধীরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়ে। জমিদার পরিবারের আরেক সদস্য দিগম্বর নন্দ স্বাধীনতা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সময় তিনি সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশ নেন এবং বিদেশী দ্রব্য বয়কটের নেতৃত্ব দেন।
advertisement
আরও পড়ুন: তাক লাগানো পারফরম্যান্স, চিনে ভলিবল প্রতিযোগিতায় ডাক ৪ বঙ্গ তনয়ার, হুগলির ২! গর্বে বুকে ভরছে বাংলার
এই জমিদার বাড়ির সঙ্গে জড়িয়ে আছে শিউরে ওঠার মতো ইতিহাস, ক্ষুদিরাম বসুর আশ্রয়। স্বাধীনতা আন্দোলনের উত্তাল সময়ে দিগম্বর নন্দ নিজেই ক্ষুদিরামকে নিয়ে এসেছিলেন এই বাড়িতে। মাটির নীচের রহস্যময় চোরাকুঠিতে বহুদিন লুকিয়ে ছিলেন ক্ষুদিরাম। চোরা পথে তৈরি সেই কুঠিরে প্রাণভয়ে দিন কাটালেও তিনি ছিলেন দৃঢ় মনোবলে অটল। জমিদার বাড়ির সেই গোপন কুঠি আজও শিহরিত করে। বাড়ির ভগ্নাংশ, পুরনো দেওয়াল, পুরনো কড়িকাঠ—সবকিছুতেই যেন লুকিয়ে আছে সেই সময়ের গল্প।
আপনার শহরের হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের নামের তালিকা পেতে এখানে Click করুন
আজও বহু ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মুগবেড়িয়া জমিদার বাড়ি। বাড়িটির অনেকটাই সংস্কার করা হয়েছে, তবু তার প্রাচীন ইতিহাস অক্ষত রয়েছে। দিঘা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে এই বাড়িতে গেলে গা শিউরে ওঠা অনুভূতি জাগে। ৬৪ কক্ষের বিশাল বাড়ি, মাটির নীচের গোপন কুঠি এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের স্মৃতি—সব মিলিয়ে এটি এক অনন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন। দিঘা ঘুরে ফেরার পথে আপনি চাইলে অবশ্যই এই জমিদার বাড়ি একবার দেখে যেতে পারেন। হেঁড়িয়া থেকে মাত্র নয় কিলোমিটার দূরে ভূপতিনগরের কাছে মুগবেড়িয়া জমিদার বাড়ি। যা আজও ইতিহাসপ্রেমীদের টানে নিজের দরজা খোলা





